আজ (৬ জুলাই) বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের দ্বিতীয় প্রয়াণ দিবস। ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বরে রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের এই গায়ক। ২০২০ সালের আজকের দিনে লাখো ভক্তকে শোকে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।

১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। প্রাথমিকভাবে তিনি সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর ওস্তাদ আব্দুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। মুক্তিযুদ্ধের পর কিশোর নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, আধুনিক, লোক ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওতে তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন।

১৯৭৭ সালে আলম খান সুরারোপিত ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে প্লেব্যাকে অভিষেক এন্ড্রু কিশোরের। তার রেকর্ডকৃত দ্বিতীয় গান বাদল রহমান পরিচালিত ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ চলচ্চিত্রের ‘ধুম ধাড়াক্কা’। তবে এ জে মিন্টু পরিচালিত ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রতীজ্ঞা চলচ্চিত্রের ‘এক চোর যায় চলে’ গানে প্রথম দর্শক তার গান শুনে এবং গানটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।

এন্ড্রু কিশোর একজন ব্যবসায়ীও ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তিনি আহমাদ ইউসুফ, আনোয়ার হোসেন বুলু, ডলি জহুর, দিদারুল আলম বাদল, শামসুল ইসলাম নান্টু সাথে টিভি নাটক, বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য প্রযোজনার জন্য একটি বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান ‘প্রবাহ’ শিরোনামে উদ্বোধন করেন।

এন্ড্রু কিশোরের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘পদ্মপাতার পানি’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল’ প্রভৃতি। 

এন্ড্রু কিশোর সংসার জীবনে স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু এবং সজ্ঞা নামে এক মেয়ে ও সপ্তক নামে এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।

বাংলা চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য ৮বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এন্ড্রু কিশোর। জীবদ্দশায় এসব পুরস্কারের চেয়েও অগণিত শ্রোতার ভালোবাসাকে জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করতেন ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ হিসেবে খ্যাত এই শিল্পী। ভক্ত-শ্রোতারা আজও মন থেকে স্মরণ করেন, তার প্রতি ভালোবাসা জানান।

আরআইজে