সুদর্শন নায়ক ছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। জিম করা ফিটনেস, সিক্স প্যাক টলিউডে এসবের অন্যতম পথিকৃতি তিনি। অভিনয়েও কম যেতেন না। বহু সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তুমুল স্রোতে টিকে থাকতে পারেননি।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি, তাপস পালের মতো প্রভাবশালী তারকাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠতে পারেননি। শোনা যায়, সিনেমা পলিটিক্সের শিকার হয়েছিলেন অভিষেক। একটি বিশেষ জুটির কারণে বহু সিনেমা থেকে বাদ পড়তে হয় তাকে।

ক্যারিয়ারের এসব অপ্রত্যাশিত প্রতিকুলতার কথা অভিমানের সুরে অভিষেক নিজেই বলে গেছেন। ‘অপুর সংসার’ নামে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘নোংরা রাজনীতির শিকার হতে হয়েছিল আমাকে। ৯ বছর হাতে কোনও কাজ ছিল না। বাধ্য হয়ে যাত্রা দলে যোগদান করি।’

টলিউড পাড়ায় শোনা যায়, প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির একচেটিয়া কাজের কারণেই ছিটকে পড়েন অভিষেক। এই জুটির বিরুদ্ধে আরও অনেক তারকাই অভিযোগ তুলেছেন। কেউ কেউ সরাসরি নাম উল্লেখ করেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে গায়ে মাখেননি বুম্বা কিংবা ঋতু কেউই।

শেষ জীবনে এসে ছোট পর্দায় কাজ করেই কেটেছে অভিষেকের দিন। বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় সিরিয়ালে তাকে দেখা গেছে। ‘ইচ্ছেনদী’, ‘পিতা’, ‘অপুর সংসার’, ‘অন্দরমহল’, ‘কুসুম দোলা’, ‘ফাগুন বউ’, ‘খড়কুটো’-এর মতো দর্শকপ্রিয় সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ভোরে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ টলিপাড়া। একইসঙ্গে উঠে আসছে অতীতের নানান ঘটনা।

জানা গেছে, বুধবার (২৩ মার্চ) একটি চ্যানেলের রিয়েলিটি শো-এর শ্যুটিংয়ে যোগ দিয়েছিলেন অভিষেক। বারবার বমি হওয়ায় স্যালাইন দেওয়া হয় তাকে। তবে শরীর ঠিক হয়নি। অসুস্থতার জন্য ফ্লোরের সদস্যরাই তাকে বাড়িতে দিয়ে যান। কিন্তু রাতেই সব শেষ।

পরিবার জানায়, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলেও যেতে রাজি হননি অভিষেক। গত দু-তিন দিন ধরেই পেটের সমস্যা ভুগছিলেন তিনি। লিভারের সমস্যা ছিল। রক্তচলাচলও স্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু কোনও কিছুকেই তোয়াক্কা না করে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত শ্যুটিং করে গেছেন এই অভিনেতা।

কেআই/আরআইজে