একাদশে ভর্তি: ৫শর বেশি শিক্ষার্থী জানেন না আবেদন করেছে কে
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে গিয়ে অদ্ভুত এক বিড়ম্বনায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। অনেকেরই আবেদন তাদের অগোচরে জমা হয়ে গেছে। শেষে পর্যন্ত ওই আবেদন বাতিল করতে তাদের হাজির হতে হয়েছে শিক্ষাবোর্ডে।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের প্রথম ধাপের অনলাইন আবেদন শেষ হচ্ছে আজ শনিবার (১৫ জানুয়ারি) রাত ১২টায়। দুপুর পর্যন্ত ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬১ জন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছে। একজন শিক্ষার্থী সর্বনিম্ন পাঁচটি থেকে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে আবেদন করতে পারেন। সেই হিসেবে এখন পর্যন্ত তারা ৭৮ লাখ ৩৯ হাজার ১৫৬টি আবেদন করেছেন।
বিজ্ঞাপন
এর মধ্যে কিছু আবেদন রয়েছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের অগোচরে জমা পড়েছে। সেই আবেদনগুলো বাতিল করতে শিক্ষার্থীরা সশরীরে শিক্ষাবোর্ডে হাজির হয়েছেন।
জানা গেছে, আগের ৪৭৭টি আবেদনের সঙ্গে গতকাল (শুক্রবার) ১২টি ও আজ দুপুর পর্যন্ত ২০টি আবেদন এসেছে। সবমিলিয়ে বাতিলের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৫০৯টি। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভর্তির এসব আবেদন বাতিল করেছে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ শাখার পরিদর্শক আবু তালেব মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুক্তভোগী যারা সশরীরে বোর্ডে আসছেন, তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রমাণসাপেক্ষে আমরা ওই আবেদনগুলো বাতিল করে দিচ্ছি। যার কারণে এ ধরনের আবেদনের অস্তিত্ব থাকছে না।
তিনি বলেন, হতে পারে যারা এ আবেদন করেছে, তাদের আইটি বিষয়ে টেকনিক্যাল জ্ঞানের অভাব রয়েছে। তবে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এটা করেছে কি না তা বলা কঠিন। কারণ ভর্তির কয়েক লাখ আবেদনের মধ্যে এমন আবেদনের সংখ্যা মাত্র পাঁচশ। যদি সংখ্যাটা কয়েক হাজার হতো, তখন ধারণা করা যেত এটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীন কলেজেই আছে দেড় হাজার। প্রত্যেকে একটি করে আবেদন করলেও দেড় হাজার আবেদন হয়। তাছাড়া আবেদনগুলো একটি বা দুটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে আসেনি। আবেদনগুলো এসেছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে।
শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে তাদের নামে যদি ভর্তির আবেদন করা হয় এবং কোনো কলেজ যদি চিহ্নিত করা যায় তবে দায়ী কলেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
ইতোমধ্যে বোর্ড থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রমে লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু প্রতারক চক্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থেকে সুকৌশলে শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করে তাদের অনুমতি ছাড়াই অনলাইনে ভর্তির আবেদন করছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সবাইকে এ ধরনের প্রতারক চক্র থেকে সাবধান থাকার জন্য সতর্ক করেছে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতারণায় জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের প্যানেল বা সার্ভার বন্ধসহ পাঠদান স্থগিত করা হবে। নির্ধারিত ভর্তি ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোনো ফেক ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন থেকে আবেদন করে কোনো শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রতারিত হলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোনোক্রমেই দায় বহন করবে না।
এএজে/এসএসএইচ