সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শীতকালীন ছুটি না কমানোর দাবি জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতারা। তারা বলছেন, শীতকালীন ছুটি ১১ দিন থেকে কমিয়ে ৬ দিন করায় মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন সারাদেশের শিক্ষকরা। 

গতকাল (রোববার) রাতে প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। এ সময় তারা ছুটি সংক্ষিপ্ত করায় শিক্ষকদের মনঃক্ষুণ্ন হওয়ার কথা জানান। 

এ বিষয়ে আজ সোমবার (২০ ডিসেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটা শিক্ষকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ে এখন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ছুটি কমানোর সিদ্ধান্তটি অদূরদর্শী।

ছুটি বহাল রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানত ১৯ ডিসেম্বর থেকে ছুটি। সেই অনুযায়ী সবাই অবকাশ যাপনের পরিকল্পনা সাজিয়েছিল। কিন্তু সর্বশেষ কর্মদিবসে হঠাৎ জানানো হলো ছুটি আরও পরে হবে। এতে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছে। 

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১৯ থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ দিন শীতকালীন ছুটির কথা ছিল। তবে ১৮ ডিসেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে আলাদা আলাদা আদেশে শীতকালীন ছুটি ২৪ থেকে ২৯ ডিসেম্বর পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এই ছয় দিনের মধ্যে ২৪ ডিসেম্বর শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন আর ২৬ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উপলক্ষে এমনিতেই বন্ধ থাকবে। তাই কার্যত শীতকালীন ছুটি তিনদিন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেজগাঁওয়ের বি কে আফতাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা ঢাকা পোস্টকে বলেন, হঠাৎ  শীতকালীন ছুটি কমানোয় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় চার লক্ষ শিক্ষকের অধিকাংশই মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। 

নতুন উদ্যমে বছর শুরুর জন্য ডিসেম্বরের এই ছুটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছুটি কমানোয় আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা সমস্যা অনুভব করছি। বছরের এই সময়টায় ছেলেমেয়েরা ভ্রমণে বের হতে চায়। কিন্তু কম ছুটির কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। 

নোয়াখালীর পানা মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের স্বপন বলেন, বিশ্রাম কাজের অঙ্গ এক সঙ্গে গাঁথা, নয়নের অংশ যেন নয়নের পাতা- প্রাথমিকের এই সহজ পাঠ ভুলে গেছেন ঊর্ধ্বতনরা। তা না হলে ১১ দিনের ছুটি কমিয়ে ৬ দিন করার যৌক্তিকতা দেখি না। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কোনো কোনো শিক্ষক। হঠাৎ ছুটি কমানোর সিদ্ধান্তকে অপরিকল্পিত ও অপরিপক্ব বলে মনে করছেন তারা। 

এএজে/এসকেডি/এইচকে