শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শুধুমাত্র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত এবং অন্যরা সপ্তাহে একদিন ক্লাস করবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনে পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের বিধান করতে বিদ্যমান আইন সংশোধনের প্রস্তাব পাসের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।  

ডা. দীপু মনি বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে আসবে। পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার একদিন আসবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক, শ্রেণিকক্ষে তাদের গাদাগাদি করে বসতে হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীকে এক সঙ্গে আনার সুযোগ থাকবে না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রস্তুতি নিতে বলেছি। এরপর জাতীয় পরামর্শ কমিটির পরামর্শ নিয়ে ঘোষণা করা হবে কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলব।

মন্ত্রী বলেন, আগামী মাসে বা দু-মাস বাদে পেনডেমিক কোথায় কোন অবস্থায় থাকবে তা এখনো বলবার কোনো সুযোগ আসেনি। তবে যে তথ্য রয়েছে তাতে দেখছি আমাদের দেশে সংক্রমণের নিম্নগতি। এতে সরকারের বিরাট সাফল্য রয়েছে।

সংক্রমণের রিয়েল টাইম বিচার বিশ্লেষণ করে সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কোন জায়গায় শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে। কোন জায়গায় ঘাটতি হচ্ছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে কী করে তা পূরণ করবো সমস্ত কিছুই বিবেচনায় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। যার ফলে আমরা নভেম্বর-ডিসেম্বর মধ্যে অ্যসাইনমেন্টের দিয়েছি। আমরা এখন ঠিকে করেছি এ শিক্ষাবর্ষে (২০২১) কোথায় কোথায় কী ঘাটতি রয়েছে। সেটাকে কী করে পূরণ করবো? এ শিক্ষাবর্ষে আমরা কতদিন পেতে পারি সেটার ওপরও অ্যাসেসমেন্ট করছি। পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য ন্যূনতম যে দক্ষতাগুলো অর্জন করতে হবে তা কারিক্যুলামের মাধ্যমে কতটুকু দিতে পারবো তা বিবেচনায় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।

২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা না নেওয়া গেলেও তাদের পরীক্ষার পূর্ণ প্রস্তুতিসহ সিলেবাস শেষ হয়ে গিয়েছিল মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের (২০২১) যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আছে তারা প্রায় এক বছর সরাসরি ক্লাসে অংশ গ্রহণ করেনি। অনলাইন কিংবা টেলিভিশনে করেছে। এর একটি অংশ হয়তো একেবারেই বাইরে রয়ে গেছে। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা এবারের এসএসসি ও এইচএসসির একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করেছি। ইতোমধ্যে প্রণয়ন করে তা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠানো হচ্ছে। তার ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো এক সময় যদি আমরা খুলে দিতে পারি তাহলে সেই অ্যাব্রিজ সিলেবাসের ওপরে এসএসসির ক্ষেত্রে তিনমাস ও এইচএসসির ক্ষেত্রে চার মাস যদি অন্তত ক্লাস করাতে পারি তাহলে সেই অ্যাব্রিজ সিলেবাসের ওপরে পরীক্ষা নিতে পারব। কাজেই যারা পরীক্ষা না নিলে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে বলছেন আশা করি তারাও আশাবাদী হবেন।

শতকরা ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয় যেতে চায় এমন জরিপ রিপোর্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন এসএমএস, ইমেইলসহ নানা ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে তথ্য পাচ্ছি তার ক্ষেত্রে আমরা এর উল্টোটা দেখতে পাচ্ছি। তারা বলেন, আমাদের পরীক্ষা দিতে বলবেন না। তাদের অনেকেই এবারের (২০২১) এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষাও দিতে চায় না। কাজেই এটি নিয়ে নানা রকমের মত আছে। অবশ্যই আমরা শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাদের সবাইকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করেই অগ্রসর হচ্ছি।

এইউএ/এসএম