ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের স্নাতক শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালীন তৃতীয়বারের মতো তারিখ পরিবর্তন করেছে প্রশাসন। বারবার পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তনের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

তাদের অভিযোগ, চলতি অক্টোবর মাসের ২ তারিখ থেকে সাত কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষ ও ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা। এরই মধ্যে পরীক্ষার সময়সূচী ৩ বার পরিবর্তন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সবশেষ স্নাতক প্রথম বর্ষের পরীক্ষার প্রকাশিত সময়সূচী ১২, ১৭ ও ২৭ অক্টোবরের পরিবর্তে যথাক্রমে ২০, ২৫ ও ২৮ নভেম্বরে নেওয়া হয়েছে। স্নাতক তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার প্রকাশিত তারিখ ১৩, ২০ ও ২৩ অক্টোবরের পরিবর্তে যথাক্রমে ৯, ২২ ও ১৫ নভেম্বর দেওয়া হয়েছে।

শুধু স্নাতকই নয়, পরিবর্তন করা হয়েছে স্নাতকোত্তর শ্রেণির সময়সূচীও। প্রথম দফায় স্নাতকোত্তর প্রথম পর্বের পরীক্ষা ১২ অক্টোবর নির্ধারিত করা হয়েছিল। পরে তা পরিবর্তন করে ২০ অক্টোবর দেওয়া হয়। এরপর একই পরীক্ষার তারিখ আবারও পরিবর্তন করে ২৬ নভেম্বর নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে স্নাতকোত্তর শেষ পর্বের ১৪ অক্টোবরের পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করে ২৫ অক্টোবর দেওয়া হয়েছে।

বারবার পরীক্ষার সময়সূচী পরিবর্তন হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রনিজুল করিম। তিনি বলেন, করোনার দীর্ঘ বন্ধের পর এই চূড়ান্ত পরীক্ষা  একমাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বারবার তারিখ পরিবর্তন করে এখন এক মাসের পরীক্ষা দুই মাসে শেষ হবে। বারবার তারিখ পরিবর্তন করলে অনেকই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

আবার অনেক শিক্ষার্থী শুধুমাত্র পরীক্ষার এই এক মাসের জন্য মেস ভাড়া নিয়েছিলেন উল্লেখ করে আরেক শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, হল বন্ধ থাকায় আবাসিক সংকটের কারণে অনেক শিক্ষার্থীই এক মাসের জন্য মেসে সিট ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু এক মাসের পরীক্ষা এখন পৌঁছেছে দুই মাসে।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তানিয়া তাবাসসুম বলেন, পরীক্ষার রুটিন করার সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সরকারি ছুটির দিনগুলো ও  তারিখ ভালোভাবে দেখা উচিত। প্রশাসনের এমন সমন্বয়হীন কাজের ফল শিক্ষার্থীদের ভোগ করতে হয়।

তবে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের অনুরোধেই পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহলুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ পরীক্ষার তারিখ পেছানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। প্রথম বর্ষের কিছু শিক্ষার্থী গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। তাই তাদের সুবিধার্থে তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা থাকলে আমাদের জানাতে পারে। আমরা সেটি বিবেচনা করব।

গত ১৮ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামালের সঙ্গে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের বৈঠক হয়। এতে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ায় বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে সাতটি কলেজে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে সশরীরে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অক্টোবরের ২ তারিখে সাত কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষ ও অক্টোবরের ৪ তারিখে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

আরএইচটি/এমএইচএস