শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়াও প্রথমবারের মতো বিভাগীয় শহরে কেন্দ্র স্থাপন করে পরীক্ষা নিতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস, নিরাপত্তা এবং ভর্তি জালিয়াতি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্সের কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান উপাচার্য।

উপাচার্য বলেন, এই প্রথম ঢাকার বাইরে আমাদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমাদের সবার জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ এবং নতুন অভিজ্ঞতা। তবে এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের অনিয়ম, জালিয়াতি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি থাকবে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা তৎপর রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সাতটি বিভাগীয় শহরে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল টিম সর্বোচ্চ নজরদারি রাখবে। ইতিমধ্যে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি কোনো ধরনের অনিয়ম হবে না।

এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসন সংখ্যা ৭ হাজার ১৪৮টি। এর বিপরীতে আবেদন করেছেন ৩ লাখ ২৪ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ‘ক’ ইউনিটে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৭টি, ‘খ’ ইউনিটে ৪৭ হাজার ৬৩২টি, ‘গ’ ইউনিটে ২৭ হাজার ৩৭৪টি, ‘ঘ’ ইউনিটে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৮১টি এবং ‘চ’ ইউনিটে ১৫ হাজার ৪৯৬টি আবেদন জমা পড়েছে।

‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনের জন্য লড়বেন ৬৪ জন। ‘খ’ ইউনিটে ২০ জন, ‘গ’ ইউনিটে ২১ জন, ‘ঘ’ ইউনিটে ৭৩ জন এবং ‘চ’ ইউনিটে ভর্তির জন্য প্রতি আসনে ১১৪ জন লড়বেন। একটি আসনের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় গড়ে ৪৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন এবার। পরীক্ষা ১১টায় শুরু হয়ে চলবে দেড় ঘণ্টা। এমসিকিউ ও লিখিত দুই অংশে যথাক্রমে ৬০ ও ৪০ নম্বরে মানবণ্টন হবে এবং চ ইউনিটের জন্য আলাদা মানবণ্টন হবে।

১ অক্টোবর বিজ্ঞান অনুষদের (ক ইউনিট) পরীক্ষা দিয়ে শুরু হবে এবারের ভর্তি পরীক্ষা। এছাড়া ২ অক্টোবর কলা অনুষদ (খ ইউনিট), ২২ অক্টোবর ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ (গ ইউনিট), ২৩ অক্টোবর সামাজিক বিজ্ঞান (ঘ ইউনিট) এবং ৯ অক্টোবর চারুকলা অনুষদের পরীক্ষা (চ ইউনিট) অনুষ্ঠিত হবে।

এসব পরীক্ষা দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা বিভাগের পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি), চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি), রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি), খুলনা বিভাগের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি), সিলেট বিভাগের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয়ে (শাবিপ্রবি), রংপুর বিভাগের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি), বরিশাল বিভাগের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি)এবং ময়মনসিংহ বিভাগের পরীক্ষা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাবিতে পরীক্ষা দেবেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬০৬ জন, চবিতে ২৮ হাজার ৪৬৯ জন, রাবিতে ৩৬ হাজার ১০১ জন, খুবিতে ২৫ হাজার ১২৬ জন, শাবিপ্রবিতে ৭ হাজার ৯১ জন, বেরোবিতে ৩১ হাজার ৩১২ জন, ববিতে ৯ হাজার ৬৭ জন, বাকৃবিতে ২২ হাজার ৫৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন 'ক' ইউনিটের সমন্বয়ক ও জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, 'খ' ইউটের সমন্বয়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, 'গ' ইউনিটের সমন্বয়ক ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন, 'ঘ' ইউনিটের সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিম প্রমুখ

এইচআর/জেডএস