আগামী ১৯ মার্চ ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে। দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরে এ পরীক্ষায় অংশ নিবে ৪ লাখ ৭৫ জন পরীক্ষার্থী। করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এত বিপুল সংখ্যাক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে (পিএসসি)। এ নিয়ে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্ত হয়েছে সংস্থাটি।

৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে করতে মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয়। সভায় এসব মন্ত্রণালয়ের সচিব ও তাদের প্রতিনিধি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

• এক বেঞ্চে একজন পরীক্ষার্থী বসানোর প্রস্তাব।  
• কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়বে। 
• কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তার জন্য শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চায় পিএসসি। 
• ৮ থেকে ৯ ফুট লম্বা বেঞ্চে ২ জন পরীক্ষার্থী বসবে। 
• বেঞ্চের দৈর্ঘ্য কম হলে বসবে ১ জন।

সভায় করোনার কারণে ৪১তম বিসিএসে পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানোর প্রস্তাব করে এসব কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তার জন্য শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চায় পিএসসি। সভায় পিএসসি পক্ষ থেকে বলা হয়, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ৮ থেকে ৯ ফুট লম্বা যেসব বেঞ্চে দুইজন পরীক্ষার্থীকে বসানো হবে। তবে বেঞ্চের দৈর্ঘ্য কম হলে একজন বসানো হবে। বেঞ্চে শিক্ষার্থীদের অবস্থান হবে ইংরেজি অক্ষর ‘Z’ এর আদলে। অর্থাৎ প্রথম বেঞ্চে বাম পাশে পরীক্ষার্থী বসলে পিছনের বেঞ্চে ডান পাশে, একইভাবে পরের বেঞ্চে বাম পাশে পরীক্ষার্থী বসানো হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীকে অবশ্যই মাস্ক পরাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

এ ব্যাপারে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) নূর আহমেদ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নেওয়া যায়। এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে বলে সবাই মত দিয়েছেন। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো, ছোট বেঞ্চে দুইজনের পরিবর্তে একজন পরীক্ষার্থী বসানো এবং ইংরেজি অক্ষর ‘Z’ আকারে বসানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।

সভায় অংশ নেওয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব বলেন, করোনার পর এত বড় পাবলিক পরীক্ষা এখনও হয়নি। তাই সভায় এই পরীক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াও কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এরমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হবে। না হলেও যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র পড়বে সেগুলো প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিষ্কার করে দেওয়া হবে।

কোন ক্যাডারে কত নিয়োগ
বিভিন্ন ক্যাডারে দুই হাজার ১৩৫ জনকে নিয়োগ দিতে গত বছরের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এতে রেকর্ড সংখ্যক চার লাখ ৭৫ হাজার জন আবেদন করেছেন।

এই বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে ৯১৫ জন, পুলিশে ১০০, স্বাস্থ্যতে সহকারী সার্জন ১১০ ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন ৩০, পররাষ্ট্রে ২৫, আনসারে ২৩, অর্থ মন্ত্রণালয়ে সহকারী মহাহিসাব রক্ষক (নিরীক্ষা ও হিসাব) ২৫, সহকারী কর কমিশনার (কর) ৬০, সহকারী কমিশনার (শুল্ক ও আবগারি) ২৩ ও সহকারী নিবন্ধক হিসেবে আট, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ১২, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী চার, সহকারী ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট এক, সহকারী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক এক, সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ২০ জন এবং সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) হিসেবে ৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

এছাড়াও তথ্য মন্ত্রণালয়ে সহকারী পরিচালক বা তথ্য কর্মকর্তা বা গবেষণা কর্মকর্তা ২২ জন, সহকারী পরিচালক (অনুষ্ঠান) ১১, সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক ৫, সহকারী বেতার প্রকৌশলী ৯, স্থানীয় সরকার বিভাগে বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে সহকারী প্রকৌশলী ৩৬ এবং সহকারী বন সংরক্ষক হিসেবে ২০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল পদে ২ জন, বিসিএস মৎস্যতে ১৫, পশুসম্পদে ৭৬, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ১৮৩, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ৬ এবং বিসিএস বাণিজ্যে সহকারী নিয়ন্ত্রক ৪ জন নিয়োগ দেওয়া হবে।

পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ৪ জন, বিসিএস খাদ্যে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক ৬ ও সহকারী রক্ষণ প্রকৌশলী ২, বিসিএস গণপূর্তে সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ৩৬ ও সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম) হিসেবে ১৫ জন কর্মকর্তাকে এই বিসিএসে নিয়োগ দেওয়া হবে।

এনএম/এইচকে