চলছিল প্রথম শিফটের ক্লাস। পরবর্তী শিফট শুরু হওয়ার কথা দুপুর দেড়টায়। কিন্তু দুপুর ১২টার মধ্যেই বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হাজির হয়ে যায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। 

৫৪৩ দিন পর স্কুল খোলার আনন্দে ক্লাস শুরুর প্রায় দেড় ঘণ্টা আগেই তারা স্কুলে উপস্থিত হয়ে অপেক্ষা করতে থাকে কাঙ্ক্ষিত সেই ক্ষণের, যে ক্ষণে তারা ক্লাসে যোগ দেবে।

এই স্কুল প্রাঙ্গণের চিত্র অন্য সব স্কুলগুলোর মতো নয়, এখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আসেননি তাদের অভিভাবকরা। অন্যান্য স্কুলগুলোর বাইরে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এই স্কুলে নেই অভিভাবকদের ভিড়। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই এসেছিল স্কুলে।

দুপুর ১২টায় স্কুলের ভেতরে তখন প্রথম শিফটের ক্লাস চলছিল আর বাইরে পরের শিফটের ক্লাসে যোগ দেওয়ার অপেক্ষা। 

অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীদের একজন তিশা আক্তার ফারিহা। সে এই স্কুলটির তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। বহুদিন পর স্কুলে আসতে পেরে সে খুশি। সেই খুশিতেই মূলত স্কুলের নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা আগেই হাজির হয় সে। তার ভাষায়- এতদিন স্কুল বন্ধ ছিল তাই কারও সাথে দেখা হয়নি, ক্লাস করতে পারিনি। আজ স্কুল খুলেছে তাই ক্লাস শুরুর আগেই চলে এসেছি।

স্কুলটির দ্বিতীয় তলায় ঘুরে দেখা যায় দুটি ক্লাস রুমে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস চলছে। স্কুলটির পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবির ফেরদৌস জানায়- তাদের ক্লাস প্রতিদিনই হবে, কিন্তু রোল নম্বর অনুযায়ী। আজ অনেক দিন পর স্কুলে আসার সুযোগ পেয়ে ভালো লাগছে তার। 

তিশার মতো সেও নির্ধারিত সময়ের আগেই হাজির হয়েছিল স্কুলে। অন্যরাও নির্ধারিত সময়ের আগেই স্কুলে চলে এসেছে বলেও জানায় আবির।  
 
দেশে করোনা মহামারির শুরুর দিকে গত বছর ১৭ মার্চ সরকার দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল। এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত একাধিকবার শ্রেণি কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সংক্রমণের দাপটে তা আর হয়ে ওঠেনি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর আজ ফের খুললো স্কুল কলেজের আঙ্গিনা।

এএসএস/এনএফ