দলে দলে প্রবেশ, শ্রেণিকক্ষে সহপাঠীদের সঙ্গে গল্প ও আনন্দ ভাগাভাগি। টিফিনে খেলাধুলায় মেতে ওঠা। দীর্ঘ ৫৪৫ দিন পর স্কুল-কলেজে এমন চিত্র দেখা যাবে।

শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবার মুখর হবে স্কুল-কলেজ। ফিরবে শিক্ষকদের পাঠদানের চিত্র, সঙ্গে ফিরবে পড়াশোনার ব্যস্ততা। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল কলেজ খোলার সংবাদে যেন প্রাণ ফিরেছে দেশের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে। 

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ওই বছরের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় বাড়তে থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি।

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের শিক্ষা কার্যক্রমে গতি আনতে নানা পদক্ষেপ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে তাতে তেমন গতি ফেরেনি। এর মধ্যেই বাতিল কিংবা স্থগিত হয়ে যায় নানা স্তরের পরীক্ষা। ২০২০ সালের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

গত বছরের পরীক্ষা না নিয়েই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ফল এ বছরের জানুয়ারিতে ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হয়। তবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আওয়াজ জোরালো হচ্ছিল। এরমধ্যেই আজ রোববার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানালেন আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে। রোববার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এ তথ্য জানান মন্ত্রী। 

এর আগে, ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে চাঁদপুরে এক অনুষ্ঠান শেষে দীপু মনি ঘোষণা করেন ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে।

রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাস্ক পরা ছাড়া কেউ শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না। শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। একেবারে কমবয়সী যারা, তাদের কোনো সংকট হচ্ছে কি না, তা শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে।

মন্ত্রী জানান, প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, সপ্তম, নবম শ্রেণির ক্লাস হবে সপ্তাহে এক দিন। শুরুতে চার ঘণ্টা করে ক্লাস হবে। পর্যায়ক্রমে সব শ্রেণির ক্লাসের সময় বাড়ানো হবে।

২০২১ এবং ২০২২ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দেবে, তারা প্রতিদিন ক্লাস করবে বলেও জানান মন্ত্রী। দীপু মনি বলেন, শুরুর দিকে চার ঘণ্টা করে ক্লাস হবে। পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে।

একে/আরএইচ