পুষ্টি পাবে, আসক্তি যাবে, স্বাবলম্বী হবে শিক্ষার্থীরা
ফলমূল, শাক-সবজি চাষে ব্যবহার হচ্ছে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। এসব খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা। এদিকে, তারা আসক্ত হচ্ছে ইন্টারনেট, গেমস ও মোবাইলে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সতেজ-পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করতে, মোবাইল-ইন্টারনেটের আসক্তি থেকে দূরে রাখতে এবং স্বাবলম্বী করে তুলতে অভূতপূর্ব উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ লক্ষ্যে ‘একজন শিক্ষার্থী : একটি সমন্বিত কৃষি খামার’ নামক প্রকল্পের গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বিজ্ঞাপন
এ প্রকল্পের ধারণা প্রস্তাবটি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আমিন উদ্দিন মৃধার। উদ্ভাবনী প্রস্তাবটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিলে ধারণাটি গ্রহণ করেছে মন্ত্রণালয়। পরে বাস্তবায়নের গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত ধারণাটির আওতায় শিক্ষার্থীদের কৃষিকাজে উৎসাহী করতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বাড়ির আঙিনায়, বাসার ছাদে, ঘরের বারান্দায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ রাস্তার ধারে, পতিত ও খাস জমিতে শাক-সবজি, ফল, পশু-পাখিপালন, মৎস্যচাষ ও বনায়নে সহায়তা করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের উৎপাদিত ভেজালমুক্ত খাদ্য খেয়ে পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। উৎপাদিত বাড়তি পণ্য বিক্রি করে আর্থিক সংকট লাঘব হবে। পড়াশোনার বাইরে কৃষিকাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ইন্টারনেটের আসক্তি দূর হবে।
শিক্ষা, কৃষি, মৎস্যসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা কৃষি কাজ করবে। তবে এ কাজে সরকারের কোনো অর্থ ব্যয় হবে না।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘শিক্ষাবিদের ধারণাটি ভালো। একটি বাড়ি, একটি খামারের আদলে এটি বাস্তবায়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে- তার একটি গাইড লাইন তৈরি করতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে (মাউশি) নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।’
মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ড. একিউএম শফিউল আজম বলেন, ‘মন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ প্রকল্পের ম্যানুয়াল তৈরির কাজ শুরু করব এবং মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেবো।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. মো. আমির উদ্দিন মৃধা ‘একজন শিক্ষার্থী : একটি সমন্বিত কৃষি খামার’ বিষয়ক উদ্ভাবনী কৃষি ধারণাপত্র গত ১৮ মার্চ মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন। এরপর প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালককে একটি ম্যানুয়াল তৈরি করতে নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী। এক্ষেত্রে প্রকল্পের প্রস্তাবক অধ্যাপক ড. মো. আমির উদ্দিন মৃধার সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে। ম্যানুয়ালটি প্রস্তুত হলে মাউশির মহাপরিচালককে মন্ত্রণালয়ে সুনির্দিষ্টভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রস্তাব পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। ১ আগস্ট এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মন্ত্রণালয় থেকে মাউশিতে পাঠানো হয়েছে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আমিন উদ্দিন মৃধার প্রস্তাবিত প্রকল্পের ধারণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘‘একজন শিক্ষার্থী একটি খামার’ হলো এমন একটি স্বপ্ন, যা জনগণের জীবনমান উন্নয়নের জন্য গ্রাম ও শহরে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের দোরগোড়ায় কৃষিকে পৌঁছে দেবে। এর মাধ্যমে খাদ্যশস্য উৎপাদন, পশু-পাখিপালন, বনায়ন, মৎস্যচাষ জনপ্রিয় হবে। আর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে প্রধানত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে।’
‘সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উদ্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে প্রকল্প সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রদান করা হবে। এর মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থী নিজ বাড়ির আঙিনায় বাগান তৈরি করবে। যেসব পরিবারে কোনো শিক্ষার্থী নেই, সেসব পরিবারে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে।
প্রকল্পের বিশেষ দিক হলো- প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের কাছে বাজেট প্রণয়নের কোনো প্রস্তাবনার প্রয়োজন হবে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার স্থানীয় উৎসই এখানে কাজে লাগানো যেতে পারে। কিন্তু শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদেশ ও নির্দেশনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নিবিড় তত্ত্বাবধানে ঘোষিত বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’
শিক্ষার্থীরা যা চাষ করবে
প্রকল্পের ধারণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ( লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, কলমিশাক, কচুশাক, মূলাশাক, গিমাশাক, ডাঁটাশাক, ধনেপাতা, বেগুন, মরিচ, লাউ, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, চিচিঙ্গা, করোলা, শসা ইত্যাদি) চাষে উৎসাহিত করা যেতে পারে। এছাড়া চারা রোপণ ও ফসল উৎপাদনের মধ্যবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্রপরিসরে হাস-মুরগি, গরু-ছাগল, মাছ চাষ করতে পারে। পাশাপাশি পরিবারগুলো হার্টিকালচার, বনায়ন ও ঔষধি গাছা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ, (পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, বেল, কামরাঙ্গা, সজিনা, নিম, বাতাবি লেবু, কাঁঠাল, আম) বিভিন্ন ধরনের কাঠ উৎপাদনকারী গাছ শিক্ষার্থীদের আঙিনায় বা বাড়ির পাশে রোপণ করবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শহর ও গ্রামাঞ্চলের পরিবারগুলোর বড় একটি অংশের আয় বৃদ্ধি ও পুষ্টি মেটানো সম্ভব। এছাড়া সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগতভাবে যথেষ্ট লাভজনক হবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা খুবই অল্প খরচে তাজা, স্বাস্থ্যকর ও ভেজালমুক্ত খাদ্য গ্রহণের সক্ষম হবে।
শিক্ষার্থীদের লাগানো বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ শুধু ভেজালমুক্ত ও সুস্বাদু ফলই দেবে না বরং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি থেকেও রক্ষা করবে। প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা তাদের বন্ধু-বান্ধব, পাড়াপ্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে উৎপাদিত শাক-সবজি বিনিময় করে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে পারবে। উৎপাদিত পণ্যের কিছু অংশ বাজারে বিক্রির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর শিক্ষা-উপকরণ ক্রয়সহ অন্যান্য খরচ মেটাতে পারবে। অতিরিক্ত উৎপাদিত পণ্য বাজারে বিক্রির মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে ভেজালমুক্ত খাদ্য সরবরাহে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে।
প্রকল্পের অংশগ্রহণকারীরা ডিম, মাছ, মাংস, ফলমূল ও শাক-সবজি খাবার তালিকায় রেখে প্রয়োজনীয় প্রোটিন, খনিজ ও ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে পারবে। শিক্ষার্থীদের লাগানো বিভিন্ন ফলের গাছ শুধু ভেজালমুক্ত ও সুস্বাদু ফলই দেবে না; বরং ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আবাসভূমিকে সুরক্ষিত করবে। এই কর্মসূচি বাগান পরিচর্যা, মাছচাষের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনমানসিকতা সজিব রাখবে। তারা একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। এছাড়াও এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনের নেতিবাচক ব্যবহার থেকে দূরে রাখা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থীরা স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি, বেসরকারি ও রাজনৈতিক সংগঠনের সহায়তায় খাস জমি, রাস্তা, রেলপথের পাশে, চরের জমি, বেড়িবাঁধ ইত্যাদি স্থানে বৃক্ষ রোপণ করতে পারবে। স্থানীয় বন বিভাগের সহায়তায় বিনামূলে গাছের চাড়া বিতরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দিয়ে বনায়ন করা সম্ভব। নগর ও শহর অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা তাদের বাড়ির কাছাকাছি অব্যবহৃত খালি জমি ব্যবহার করতে পারে। জমি না পেলে তাদের বাড়ির ছাদে সবজি বা ছোট ছোট ফলের গাছ রোপণ করে বাগান তৈরি করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা বাড়ির বারান্দায় বিভিন্ন অব্যবহৃত পাত্রে শাক-সবজি উৎপাদন করে পরিবারের সুস্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে পারবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত খালি জমিতে শিক্ষার্থীদের দ্বারা বিভিন্ন মৌসুমি ও অঞ্চল উপযোগী শাক-সবজি উৎপাদন করানো যেতে পারে। প্রস্তাবিত কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা ‘ভার্মি কম্পোস্ট প্রযুক্তি’ এবং জৈব সার ব্যবহারসহ কৃষিক্ষেত্রে নতুন নতুন গবেষণা করতে পারবে।
এই প্রকল্পের শিক্ষার্থীরা সব কিছুই উৎপাদন করবে জৈবিক কৃষি পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে, যা সবুজ কৃষি নামে পরিচিত। যেখানে ক্ষতিকর রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি উৎপাদন করা হয়। সমবায় বাজার ব্যবস্থা অথবা ই-মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ভেজাল ও রাসায়নিক সারমুক্ত এসব খাদ্য শহরের বাজারে সরবরাহের ব্যবস্থা করা সম্ভব।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজন একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি। যেখানে কৃষি, শিক্ষা, প্রাণিসম্পদ, বন ও পরিবেশ, মৎস্যসম্পদ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ প্রয়োজনীয় সংস্থার প্রতিনিধি থাকা প্রয়োজন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন গবেষণা ও সহায়ক সংস্থার সহায়তায় একটি ‘ম্যানুয়াল’ প্রস্তুত করা হবে।’
যেভাবে বাস্তবায়ন হবে
এ প্রকল্পে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো সরাসরি যুক্ত থাকবে। কারণ, তাদের ইউনিয়ন ও জেলা পর্যায়ের ব্লক সুপারভাইজার ও কর্মী আছে। প্রাথমিকভাবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উপজেলার কৃষি বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে শিক্ষকদের জন্য একটি সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণের আয়োজন করবেন। এরপর শিক্ষকরা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে তাদেরকে এ সংক্রান্ত ‘ম্যানুয়াল’ প্রদান করবেন। শিক্ষকরা সারা বছরের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন। শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, কৃষি গবেষণা সংস্থা, এনজিও, ইউটিউব, ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন মিডিয়ার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহযোগিতা নেবে।
শুরুতে কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি পাইলট প্রকল্প নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আটটি বিভাগ থেকে অন্তত ২০টি মহিলা কলেজ নির্বাচিত করে প্রকল্পটি শুরু করা যেতে পারে। পরে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। বর্তমানে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার কশানাথপুর মহিলা কলেজে এই ধারণাটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।
জানতে চাইলে ধারণাটির উদ্ভাবক কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. মো. আমির উদ্দিন মৃধা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের দেশে সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থী আছে। তাদেরকে কৃষিকাজে লাগাতে পারলে আমাদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হবে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের উৎপাদিত খাদ্য খেয়ে আমিষ ও প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী যদি একটি করে তাল গাছ লাগায় তাহলে বজ্রপাত থেকে দেশ রক্ষা পাবে। এভাবে বনায়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কমে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে কৃষিকাজে উৎসাহী হয় সেজন্য একটি মূল্যায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। মূল্যায়ন শেষে প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।’
‘এ প্রকল্পে কোনো অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়নি। নিজেদের কাজ নিজেরা করবে। গ্রামে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বাড়ির আঙিনায় চাষাবাদ করতে পারবে। শহরের বাড়ির ছাদে, বারান্দায় সবজি চাষের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী কৃষিকাজের মাধ্যমে একজন শিক্ষিত কৃষক হয়ে উঠবে।’
ড. মো. আমির উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা থেকে প্রস্তাবটি তৈরিতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।’
এনএম/এইচকে/এমএইচএস