২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর প্রত্যাহারের জন্য আবারও সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি।

শনিবার (৩ জুলাই) সংগঠনটির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীর কাছে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।  

সংগঠনটির দাবি, বর্তমানে বাংলাদেশে ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ নির্ভরতা কমার পাশাপাশি মেধাপাচার বন্ধ ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। একইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। এ কাজটি করছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

করোনার এ সময়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করছে। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়মিত না পাওয়ায় বৃত্তি ও টিউশন ফির ওপর ছাড় দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। তাছাড়া এইচএসসি পরীক্ষা সময়মতো না হওয়ায় কারণে শিক্ষার্থী সংকটও দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সব মহল এবং শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। 

সরকার শিক্ষাখাতকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় প্রায় বিভিন্ন স্তরে ভর্তুকি ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। কিন্তু এ ভর্তুক্তি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কখনও পায়নি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, বিভিন্ন কেনাকাটা, ক্যাম্পাস নির্মাণ সামগ্রীর ওপর সরকারি ভ্যাট ও কর হিসেবে শত শত কোটি টাকা রাজস্ব পরিশোধ করা হয়।

করোনা দুর্যোগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন আর্থিক প্রণোদনা ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সহায়তার জন্য সরকারের কাছে বারবার আবেদন জানিয়ে আসছে সে সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে প্রতীয়মান। যা সরকারের উচ্চশিক্ষা প্রসারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিকও বটে।

তাদের দাবি, কোম্পানি আইনের আওতায় লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত মেডিক্যাল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সঙ্গে ট্রাস্ট আইনে ১৮৮২ অনুযায়ী পরিচালিত অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর একই আওতায় সমভাবে আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত প্রচলিত আইনের পরিপন্থি।

সমিতির দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ, ল্যাব-লাইব্রেরির উন্নয়ন, শিক্ষক নিয়োগ, গবেষণা কার্যক্রম ইত্যাদি পরিচালনা করতে হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ আয় থেকে কোনো ধরনের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতারা গ্রহণ করতে পারেন না। এক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপ করা হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রুগ্ন হয়ে পড়বে এবং এসব প্রতিষ্ঠানের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন যেমন বাধাগ্রস্ত হবে তেমনি করের চাপে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যয়ও বাড়বে।

এনএম/জেডএস