প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আগামী ১০ জুনের মধ্যে এটি বাতিল না হলে কঠোর কর্মসূচিরও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

শুক্রুবার (৪ জুন) দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মুক্ত রেজোয়ান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আপনারা বিগত ২০১০ ও ২০১৫ সালে দেখেছেন বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার ওপরে সরকারের যে অযৌক্তিক ভ্যাট চাপানোর চেষ্টা তার বিরুদ্ধে ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন’ সরব ছিল এবং বেসকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে পণ্যে রূপান্তরের যে অপচেষ্টা তা রুখে দিয়ে ২০১৫ সালে সরকারকে ভ্যাট প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছিল। এবারও আগের মতো আমরা বলতে চাই শুধু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় যেখানেই শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তরের ন্যূনতম চেষ্টা চলবে সেখানেই আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে। যদি তা-ই হয় তবে কী করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মালিকপক্ষ মুনাফা অর্জন করে। ২০১০ সালের আইন অনুযায়ী বলা চলে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মালিকপক্ষ যে মুনাফা অর্জন করছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। গতকালের (বৃহস্পতিবার) প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ কর আরোপের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবৈধ মুনাফা অর্জনের সুযোগ করে দিচ্ছে এবং অবৈধ মুনাফাকে বৈধতা দেওয়ারও চেষ্টা করছে।

মুক্ত রেজোয়ান বলেন, আমরা এ সংবাদ সম্মেলন থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যে কর আরোপের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা শিক্ষার্থীদের ওপর পড়লে ছাত্র-সমাজ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। এছাড়া আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বিগত বাজেটের মোট জিডিপির তুলনায় ০.০৩৬ শতাংশ কমেছে। তাই এ বাজেট কোনোভাবেই শিক্ষাবান্ধব হতে পারে না। আমরা শিক্ষা খাতে মোট জিডিপির ৮ ভাগ বরাদ্দের দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ছয়টি দাবি উত্তাপন করা হয়। সেগুলো হলো- ১৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব বাতিল করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব ইউজিসিকে খতিয়ে দেখতে হবে; সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন টিউশন ফি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করতে হবে; গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে; শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিশ্চিতে প্রণোদনা দিতে হবে।

আগামী ১০ জুনের মধ্যে দাবিগুলো মেনে নেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণারও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শাওন বিশ্বাস, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শাহারিয়ার অপূর্ব, সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শাজাহান শান্ত, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান সুজন, আশা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মো. আমান, গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী প্রিতম ফকির।

এইচআর/এমএআর/