প্রশ্নফাঁসের গুজব
পরীক্ষার দুদিন আগে স্থগিত মাউশির ৪০৩২ পদের নিয়োগ পরীক্ষা
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা হঠাৎ স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ৪ জুন বিকেলে ‘স্টোর কিপার’ ও ‘ক্যাশিয়ার’ পদের লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎ এ পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানিয়ে নোটিশ দিয়েছে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অফিদফতর (মাউশি)।
মাউশির উপ-পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) ও বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির সদস্য সচিব মো. রুহুল মমিন স্বাক্ষরিত নোটিশে পরীক্ষা স্থগিতের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কী কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে, সেটা উল্লেখ করা হয়নি।
বিজ্ঞাপন
তবে মাউশির একটি সূত্র বলছে, হঠাৎ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে একবার এ পরীক্ষার তারিখ দিয়েও শেষ পর্যন্ত তা অনুষ্ঠিত হয়নি।
পরীক্ষা স্থগিত করার নোটিশে আরও বলা হয়, ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর প্রকাশিত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্যাশিয়ার/স্টোর কিপার (পদকোড : ৩১৮ ), ক্যাশিয়ার (পদকোড : ৩২০) এবং স্টোর কিপার (পদকোড : ৩২১) পদে আগামী ৪ জুন অনুষ্ঠিতব্য লিখিত পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হলো।
উল্লিখিত পদসমূহের পরীক্ষার পুনর্নির্ধারিত তারিখ ও সময় পরবর্তীতে প্রার্থীদের মোবাইল ফোনে এসএমএস প্রদানসহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েব সাইটে এবং জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।
জানা গেছে, গত বছর অক্টোবর মাসে বিভিন্ন জেলা-উপজেলার শিক্ষা অফিস এবং সরকারি স্কুল-কলেজের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২৮টি পদের বিপরীতে চার হাজার ৩২টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাউশি। এসব পদের নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে এসব পদের জন্য প্রায় নয় লাখ আবেদন জমা পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত নভেম্বর থেকে মাউশি অধিদফতরের একটি সিন্ডিকেট অবৈধ উপায়ে এসব পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে আর্থিক লেনদেন শুরু করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি আঁচ করার পর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর মাউশি অধিদফতর থেকে সতর্কতা জারি করা হয়।
সেখানে বলা হয়, গত ২২ অক্টোবর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। এখন পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি ও দাফতরিক কার্যক্রম চলছে। কিন্তু এরই মধ্যে প্রতারক চক্র চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে আবেদনকারী প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, একটি সিন্ডিকেট চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকরির প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। সতর্কতা জারির পরও ওই সিন্ডিকেটের তৎপরতা থেমে নেই। এ চক্রের সদস্যরা এখন দ্রুততার সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
পরীক্ষার দুদিন বাকি থাকতে চক্রটি ফের তৎপরতা শুরু করেছে। গুজব উঠছে, লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়েছে। এমন বিতর্কের মধ্যে এ পরীক্ষা স্থগিত করা হলো।
কেন এ পরীক্ষা স্থগিত করা হলো— জানতে চাইলে দায়িত্বরত কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিষয়টি নিয়ে মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তারা। মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর সৈয়দ গোলাম মো. ফারুককে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এনএম/এমএআর/