বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। এ পরিস্থিতির মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে সে ব্যাপারে নিজেদের গ্রহণ করা সিদ্ধান্ত আজ মঙ্গলবার (১ জুন) জানিয়ে দেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইতোমধ্যে উপাচার্যদের মতামত নেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তও জেনেছে কমিশন।

জানা গেছে, সোমবার দীর্ঘ সময় ধরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। সেখানে নেওয়া সিদ্ধান্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে সরকারের অবস্থান জানিয়ে দেবে ইউজিসি। সে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা সোমবারের বৈঠক নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। 

অনেক দিন হলো পরীক্ষার হলের এই চিত্র দেখা যায় না/ ছবি- সংগৃহীত

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে আগামী ১৩ জুন থেকে স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে টিকা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় খোলা যাবে না বলে সরকার ও ইউজিসি একাধিকবার জানিয়ে দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যেই ইউজিসির ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পক্ষে মত দুই মন্ত্রণালয় ও কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য চাপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্যরা। এছাড়া সরাসরি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তকেও সভায় স্বাগত জানিয়েছেন তারা। পরীক্ষাগুলো শুরু করা গেলে শিক্ষার্থীদের চাপ কমবে বলে মনে করছেন উপাচার্যরা। 

করোনার কারণে ১৫ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ক্ষতি পোষাতে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া এবং নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাস্তবে কিছুই হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিয়ে সরাসরি ক্লাস পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে সারাদেশে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে সব শিক্ষার্থীকে করোনা টিকার আওতায় আনার সুপারিশ করেছে ইউজিসি

এ অবস্থায় যেকোনো দিন অনলাইনে এবং ফিজিক্যালি যে যেভাবে চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সেভাবে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত এক উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তক্রমে আজকের পর যেকোনো দিন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা নিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে আবাসিক হল খোলা যাবে না। আবাসিক হল খুলতে হলে শতভাগ টিকাদান নিশ্চিত করতে হবে। আর দ্রুত এ টিকাদান নিশ্চিত করতে একটি অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে।

বৈঠকে উপস্থিত অন্য একজন উপাচার্য বলেন, করোনাকালে উচ্চশিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। মঞ্জুরি কমিশন সেটা অনুমোদন করলে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতি পোষাতে কার্যক্রম চালাতে পারবে।

এনএম/এইচকে