আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ২৯তম জলবায়ু সম্মেলন (কপ ২৯) জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। এই সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধান, বিজ্ঞানী, নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা অংশ নেন। 

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সম্মেলনের প্রত্যাশা, বাস্তবতা এবং ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

ইউএপি স্কুল অফ বিজনেসের ডিন অধ্যাপক ড. এম. এ. বাকি খালিলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, ইউএপি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, চেয়ারপারসন স্থপতি মাহবুবা হক ও ইউএপি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুবর্ণা বড়ুয়া।

প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন- বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, পরিবেশ বিভাগের জলবায়ু পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পরিচালক শওকত আলী মির্জা, পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বী সাদিক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. শাহ আব্দুল সাদী, হাফিজ খান, পরিবেশগত আইনজীবী; এম. জাকির হোসেন খান, প্রধান নির্বাহী, চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ; মো. শামসুদ্দোহা, প্রধান নির্বাহী, সিপিআরডি; ড. এস. এম. মুনজুরুল হান্নান খান, নির্বাহী পরিচালক, এনএসিওএম; কাজী আমদাদুল হক, সিনিয়র পরিচালক - কৌশলগত পরিকল্পনা এবং জলবায়ু, ফ্রেন্ডশিপ; ড. মোহাম্মদ এমরান হাসান, জলবায়ু বিচার প্রধান, অক্সফাম; শরিফ জামিল, সদস্য সচিব, ধোরিত্রী রক্ষায় আমরা; জেসমিমা সাবাতিনা, নির্বাহী বোর্ড সদস্য, ইফোরজেন; বারিশ হাসান চৌধুরী, প্রচারণা ও নীতি সমন্বয়কারী, বেলা; ইউ খিং চাক, নির্বাহী বোর্ড সদস্য, গ্রিন মিলিউ; মিয়ার ডং, ফেলো, চায়না ইয়ুথ ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (সিওয়াইসিএএন)।

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কপ-কে অনেক বেশি জটিল করে ফেলা হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্বের যে অর্থনৈতিক মডেল দাঁড়িয়েছে তা থেকে কেউ সরে আসতে চাইছে না।

তিনি বলেন, যাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আমরা দরকষাকষি করি সেখানে শক্তি, অর্থনীতি, প্রযুক্তির দিক থেকে এটা একটা অসম প্রতিযোগিতা। তাই সমস্যা নিরসনে রাজনৈতিক শক্ত অবস্থানের পাশাপাশি প্রয়োজন নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নেওয়া। তবে প্রচলিত ছকে বেঁধে নয়। একই সঙ্গে প্রয়োজন জীবনযাত্রার প্রয়োজন। জনগণ বাঁচাতে বাড়াতে হবে বাজেট ও সক্ষমতা।

কপ ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে ড. আইনুন নিশাত বলেন, জলবায়ুর দরকষাকষিতে ভারতের সবচেয়ে বড় বন্ধু হয় চীন-পাকিস্তান। কপ ২৮-এ যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তার অনেকগুলোই ২৯ এ ফেলে দিয়েছে।  প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা থাকলেও উন্নত বিশ্ব তা দেয়নি।

প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বলেন, কপ ২৯-এ আর্থিক আলোচনার বিষয়টি অত্যন্ত ধীরগতিতে এগিয়েছে, যা ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি প্রতিস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া জীবাশ্ম জ্বালানির ভর্তুকি ১.৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা নবায়নযোগ্য শক্তির অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।

তারা আরও বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোর জন্য প্রতি বছর ১ ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, যার এক-তৃতীয়াংশ ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে আসা উচিত।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন-  ইউএপি স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাইনের ডিন অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ মোস্তাক আহমেদ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. নেহরীন মাজেদ, ইউএপি ব্যবসায় প্রশাসনের বিভাগীয় প্রধান সারওয়ার রাজ্জাক চৌধুরী প্রমুখ।

এমএন