একঝাঁক প্রশিক্ষিত-দক্ষ শিক্ষক, সুবিশাল নিজস্ব ভবন, মনোরম শ্রেণিকক্ষ এবং নিজস্ব খেলার মাঠসহ শিক্ষাঙ্গনের সব সুবিধার সম্মিলিত প্রতিষ্ঠান ‘নবেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’। এখানে যেমন শিক্ষার সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তেমনি সার্বিক বিষয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষক সবার পরামর্শ শোনা ও বলার জন্য প্রতি মাসেই আয়োজন করা মতবিনিময় সভার।

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৩০ নভেম্বর) স্কুলটিতে এমন আয়োজন করা হয়েছিল। মতবিনিময়ের পাশাপাশি অভিভাবকদের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন ছিল। অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ প্রায় ১৫০০ মানুষ এতে অংশ নেন। যার মধ্যদিয়ে তৈরি হয়েছিল একটি বিশাল মিলনমেলার।

এদিন রাজধানীর আফতাবনগরের ই-ব্লকের ৩ নম্বর রোডের ৪২ নম্বর প্লটে গড়ে ওঠা বিদ্যালয়টিতে প্রথমে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মধ্যাহ্নভোজ পরে শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষকদের মিলনমেলায় রূপ নেয় কলেজপ্রাঙ্গণ।

প্রথম থেকেই অত্যাধুনিক ও বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। যার ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের পরামর্শগুলোতে প্রাধান্য দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। গাদা গাদা বইয়ের চাপ নয়। খেলার ছলে বাস্তবমুখি ও পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে স্কুল অ্যান্ড কলেজটি।

কিন্ডারগার্টেনের জনক বিখ্যাত জার্মান শিশু-শিক্ষানুরাগী ফ্রেডরিক উইলহেম আগস্ট ফ্রোয়েবলের খেলার ছলের সেই পাঠদান পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ বায়জিদ বলেন, বছর শেষে শিক্ষক-অভিভাবক মিলে মতবিনিময় সভা করেছি। সভা শেষে অভিভাবকদের সম্মানে আমরা মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিলাম। অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ প্রায় ১৫০০ মানুষ এতে অংশ নেন। অভিভাবকরা আমাদের স্কুলের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে নিজেদের সন্তুষ্টির কথা তুলে ধরেন পাশাপাশি আরও কীভাবে ভালো করা যায় তার পরামর্শ প্রদান করেন।

তিনি বলেন, প্রতি মাসে আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করি। তখন অভিভাবকদের আমাদের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে জানাই পাশাপাশি অভিভাবকরা আমাদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।

প্রধান শিক্ষক আরও জানান, স্কুলে মোট ৬৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাও রয়েছে। এ ছাড়া, হিফজুল কোরআন বিভাগ আছে, নুরানি পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষা আছে। একই সঙ্গে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।

এদিনের আয়োজনে নবেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও আফতাবনগর জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটির সভাপতি আলমগীর হোসেন ঢালী, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক এমডি হেলাল উদ্দীন, সোনালী ব্যাংকের সাবেক জিএম খায়রুল ইসলাম, ইমপেরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ আরিফ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

নবেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধান শিক্ষক আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ বায়জিদ বলেন, শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। স্কুলটিতে সুবিশাল খেলার মাঠ, পর্যাপ্ত খেলার সরঞ্জাম ও সুইমিং পুল রয়েছে। এ ছাড়া ইনডোর গেমসের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম। সুইমিং পুলের জন্য দক্ষ প্রশিক্ষক শিশুদের সাঁতার শিখতে সহায়তা করেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের রয়েছে অভিজ্ঞ শিক্ষক। শিশুকে বাস্তবমুখি এবং কার্যকরী শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ শিক্ষক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি মাথায় রেখে অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক প্যানেল। এ ছাড়া নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি এ শিক্ষকদের মানোন্নয়নের জন্য রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। রয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক্লাসরুমও। 

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে দক্ষ হয়ে গড়ে ওঠার বিকল্প নেই উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষক বলেন, এ বিষয়টি মাথায় রেখে স্কুলটিতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও এয়ার কন্ডিশন সুবিধা রাখা হয়েছে। শিশুকে পার্থিব শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা, গভীর জীবনবোধ ও ধর্মীয় বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে স্কুলটিতে আছেন অভিজ্ঞ হাফেজ। ক্লাসের শুরুতেই নুরানী পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর ফলে কোমলমতি শিশু প্রতিদিনের পাঠের সঙ্গে একজন আদর্শ মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

তিনি বলেন, শিশুর বেড়ে ওঠার পেছনে যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ রয়েছে তার মধ্যে সুষম খাদ্য অন্যতম। শিশুদের স্বাস্থ্যসম্মত ও উন্নতমানের ক্যান্টিন নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও কঠোর মনিটরিং। শিশু কখন স্কুলে প্রবেশ করেছে, কখন বের হয়েছে, তাসহ উপস্থিতি-অনুপস্থিতির সব তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে অভিভাবকদের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে অবহিত করার সুযোগ রয়েছে।

প্রধান শিক্ষক বলেন, একমাত্র বই মানুষের উন্নত চিন্তা, সুস্থ বিনোদন ও সমৃদ্ধ জীবনযাপনের রসদ জোগাতে পারে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে স্কুলটিতে রাখা হয়েছে সুসজ্জিত লাইব্রেরি। একই সঙ্গে অর্জিত জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগ ও নেতৃত্ব দানের দক্ষতা গড়ে তুলতে স্কুলটিতে বিজ্ঞান ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব এবং বিভিন্ন ক্লাব রয়েছে।

তিনি বলেন, অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের বিষয়টি আমরা সবসময় প্রাধান্য দেই। যে কারণে প্রতি মাসেই এর আয়োজন করি। শিশুর সার্বিক উন্নয়নে শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের মতবিনিময়ের বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীর সুবিধা-অসুবিধা জানতে ও জানাতে প্রতি মাসে নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

দরিদ্র ও মেধাবীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্কুলটিতে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা বৃত্তির সুযোগ রয়েছে। ফলে ভালো ফলাফলের পাশাপাশি তা মূল্যায়নের জন্য এ চেষ্টা শিক্ষার্থীদের আরও প্রাণবন্ত এবং পরিশ্রমী করে তুলবে। এ ছাড়া কোমলমতি শিশুদের প্রতিভা বিকাশে অভিনয়, আবৃত্তি, নৃত্য, সঙ্গীত, শরীরচর্চা, অঙ্কন, বিতর্ক, স্কাউটিং ও বিএনসিসির সুবিধা রয়েছে। অপরদিকে হাতের লেখা সুন্দর করতে রয়েছে দক্ষ প্রশিক্ষক।

এএসএস/এমজে