জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান বলেছেন, বাংলাদেশের ৫৩ বছরে বিরাজমান শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণে একমাত্র পন্থা হচ্ছে জাতীয়করণ। শিক্ষা ক্ষেত্রে ৯০ ভাগ দায়িত্ব পালন করে বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীরা। অথচ দেশের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক কর্মচারী বেতন বৈষম্যের শিকার।

তিনি বলেন, সরকারি শিক্ষকদের উৎসব ভাতা শতভাগ বেসরকারি শিক্ষকরা উৎসব ভাতা পাচ্ছেন সিকি ভাগ। সরকারি শিক্ষকরা পেনশন সুবিধা পাচ্ছেন আমৃত্যু, পক্ষান্তরে বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীরা অবসর সুবিধা ভাতা ও কল্যাণ ভাতা না পেয়ে মানুষ গড়ার কারিগররা মৃত্যুবরণ করছেন যা একটা জাতির জন্য লজ্জাজনক এবং সরকারের জন্য ব্যর্থতার স্পষ্ট ছাপ।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ মহাজোটের অবস্থান কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে সমান দায়িত্ব পালন করে সরকারি শিক্ষকরা যেসব সুযোগ সুবিধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন বেসরকারি শিক্ষকরা সে ক্ষেত্রে স্পষ্ট বৈষম্যের শিকার। সরকারি শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ৪৫ শতাংশ অথচ বেসরকারি শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া পাচ্ছেন মাত্র এক হাজার টাকা। টেকসই শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের বিকল্প নেই।

জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া বলেন, গত ১৬ বছর শিক্ষাক্ষেত্রে যে বৈষম্য চলেছে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয়করণের মাধ্যমে সে বৈষম্য দূর করবে; সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক কর্মচারী সে প্রত্যাশা করছে।

তিনি আরও বলেন জাতীয়করণ করার জন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরসমূহের আয় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা নিয়ে জাতীয়করণ করলে সরকারের ওপর তেমন চাপ সৃষ্টি হবে না। জাতীয়করণ করলে শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে, মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়া সমস্যা দূরীভূত হবে, কেননা শিক্ষার্থীরা কম খরচে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালে শেখ হাসিনা সরকার ২৬ হাজার রেজিস্টার্ড প্রাইমারি স্কুলকে জাতীয়করণ করেন অথচ একই অধ্যাদেশে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রতি চরম বৈষম্য প্রদর্শন করে যা বিগত সরকারের ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ও অমানবিক আচরণ। বর্তমানে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীরা অর্ধাহারে -অনাহারে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বৈষম্য দূর করার জন্য ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো জাতীয়করণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। 

জেইউ/এসকেডি