এইচএসসির ফলে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। ফলাফল পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঘুরে দেখা যায়, ১১টার দিকে গেটের ভেতর খালি জায়গায় টানিয়ে দেওয়া হয় ফলাফলের শিট। শুরুতে কয়েকজন শিক্ষার্থী থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসেছেন অভিভাবকরাও। দুপুর ১২টার পরে কলেজের অধ্যক্ষকে সঙ্গে নিয়ে গ্রুপ ছবি তুলতে আসেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ড্রামের তালে তালে হইচই করে উল্লাস প্রকাশ করেন তারা। সন্তানদের ফলাফলে খুশি পরিবারের সদস্যরাও।
বিজ্ঞাপন
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিশাত নাজনীন আনিকা ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুরুতে আমাদের প্রস্তুতি ভালোই ছিল। প্রথমদিকের পরীক্ষাগুলো ভালো দিয়েছি। কিন্তু পরে তো পরীক্ষা হয়নি। যখন জানলাম ওই বিষয়ের পরীক্ষাগুলোর ফলাফল ম্যাপিং করা হবে, তখনও দুঃশ্চিন্তা হয়নি। কারণ, এসএসসি জিপিএ ৫ ছিল। সব কিছু মিলিয়ে আলহামদুলিল্লাহ রেজাল্ট ভালো হয়েছে।
আরকে শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা আশা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাবজেক্ট ম্যাপিং অনুযায়ী আমার রেজাল্ট ঠিক আছে। তবে আমার কয়েকজন বন্ধুদের রেজাল্ট ঠিক নেই বলে জেনেছি। জেএসসি ও এসএসসিতে যে সাবজেক্টে ভালো রেজাল্ট হয়েছে, এবার সেসব সাবজেক্টে তাদের রেজাল্ট খারাপ এসেছে। আর যে বিষয়গুলোতে আমরা পরীক্ষা দিয়েছি সেগুলো রেজাল্ট প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়েছে। তবে বাংলা ও ইংরেজিতে সবারই মনে হচ্ছে খারাপ হয়েছে।
আরও পড়ুন
অভিভাবক সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা হয়তো আনন্দ করছি, কিন্তু আন্দোলনে যেসব শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের কথা ভেবে খারাপ লাগছে। তিনটা পরীক্ষা হয়েছিল। আর ছয়টা পরীক্ষা হয়নি। সরকার যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, হয়তো ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এবার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে তিনটি বিভাগে মোট ২ হাজার ৫৬৯ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ২ হাজার ৫৫৯ জন। পরীক্ষা অনুপস্থিত ছিলেন ১০ জন। প্রতিষ্ঠানটিতে পাসের হার ৯৯.০৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক হাজার ৭৩৭ জন শিক্ষার্থী।
এদিকে এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল বেলা ১১টায় ফল স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে এবং অনলাইনে একযোগে প্রকাশিত হয়। এ বছর ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। কয়েকটি পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে কয়েক দফায় স্থগিত করা হয়। পরে সংশোধিত সময়সূচি করেও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বাকি পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়। এরপর শুরু হয় বাতিল পরীক্ষাগুলো ফলাফল নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা। শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি ও জেএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে ফল নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা পরিমার্জন করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে শুধু এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর ফল নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৫ বছরের রীতি ভেঙে ভিন্ন পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ফলাফল প্রকাশ করা হতো প্রধানমন্ত্রীর হাত তুলে দেওয়ার মাধ্যমে। এরপর দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করতেন। এবার সেই রীতি ভেঙে নতুন আঙ্গিকে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। তাছাড়া ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম উপলক্ষ্যে কলেজ ছুটি থাকায় ফলাফল জানতে শিক্ষার্থীদের অনেকটা অনলাইন-নির্ভর থাকতে হয়ে। ফলে কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছিল কম।
/এমএইচএন/এমএ