পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য ১০ সদস্যের সমন্বয় কমিটি গঠনের ১৩ দিন পর তা বাতিল করা হয়েছে। ওই কমিটি বাতিলের পর এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এবার পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি বাতিলের নিন্দা জানিয়েছেন ১২২ নাগরিক।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান তারা। বিবৃতিতে অবিলম্বে কমিটি পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সমন্বয়হীন অদূরদর্শিতার ফলস্বরূপ পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি ২৮ সেপ্টেম্বর বাতিল করা হয়েছে। এর আগে ওই সমন্বয় কমিটির সদস্য এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের অংশীজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনের বিরুদ্ধে ‘ইসলামবিদ্বেষের’ সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ তোলে একটি পক্ষ। এসব অভিযোগের মধ্য দিয়ে সমাজের ব্যাপকসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভ্রান্তি ও অসহিষ্ণুতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র যে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে সংস্কারের পথে হাঁটছে, এ ধরনের তৎপরতা সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের অন্তরায়।

এতে আরও বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ধর্মের নামে একটি বিশেষ গোষ্ঠী আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জায়গা দখল করছে। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় ও ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে জন-উষ্মা উসকে দিয়ে তারা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা নস্যাৎ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে এবং মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছে।

১২২ নাগরিকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের ভিত্তিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংগঠিত গণ-উষ্মাকে আমলে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার পাঠ্যপুস্তক সংশোধনে গঠিত সমন্বয় কমিটি বাতিল ঘোষণা করেছে। এর মধ্য দিয়ে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সরকারের এই নতজানু নীতি গণআন্দোলনের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি। এ অবস্থায় অনতিবিলম্বে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটি পুনর্বহাল করার দাবি জানান তারা।

বিবৃতিদাতারা হলেন– অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, আবু সাঈদ খান, মাহা মির্জা, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, কামার আহমাদ সাইমন, জোবাইদা নাসরীন, সুমন রহমান, ওমর তারেক চৌধুরী, মোশাহিদা সুলতানা, শাহমান মৈশান, কাজী মারুফ, নাসরিন খন্দকার, ইলিরা দেওয়ান, মানজুর আল মতিন, তানিয়াহ্ মাহমুদা, সাদিয়া আফরিন, জাকির তালুকদার, শর্মী হোসেন, বর্ণালী সাহা, বীথি ঘোষ, বাকী বিল্লাহ, অমল আকাশ, সীমা দত্ত, জামসেদ আনোয়ার, রহমান মুফিজ, ফেরদৌস আরা, রাফসান আহমেদ, হারুন-উর-রশীদ, আফজালুল বাসার, আরিফ রহমান, মোহাম্মদ আলী হায়দার, এম এইচ চৌধুরী লেলিন, সৈকত আমীন, সালমান সিদ্দিকী, নাশাদ ময়ুখ, মাসুদ রানা, মফিজুর রহমান, মারজিয়া প্রভা, পূরবী তালুকদার, জেসমীন দিনা রায়, সারা আহমেদ, মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, মানস নন্দী, শাহীনূর আক্তার, মাহির আহনাফ হোসেন, মোশফেক আরা, মিতা নাহার, অনিক রায়, মাহতাব উদ্দীন আহমেদ, কামরুজ্জামান রিপন, ইমেল হক, ইসহাক সরকার, লাবণী মণ্ডল, মাসুদ রেজা, সেতু আরিফ, স্মিতা রায়, রাশেদ শাহরিয়ার, আমিরুন নূজহাত, দিলীপ রায়, কৌশিক আহমেদ, সিমু নাসের, সাদিক আলম, মঈন জালাল চৌধুরী, বাঁধন অধিকারী, হামিম কামাল, পারভেজ মাহমুদ, আফজাল হোসেন, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, মীর সাখাওয়াত, সাদরুল হাসান, মজিবুল হক, রজত হুদা, এহসান মাহমুদ, মৃদুল মাহবুব, কাজী আবদুর রহমান, শামীম আরা নীপা, শবনম হাফিজ, আয়েন উদ্দীন, শাহেরীন আরাফাত, রাগীব নাঈম, হেমন্ত হিম, জাফর হোসেন, তাওফিকা প্রিয়া, তানভীর তিয়াস, ইকবাল খান, রাফিকুজ্জামান ফরিদ, লাবনী আশরাফী, হুমায়ুন আজম, সৈয়দ আবুল কালাম, সৈয়দা পারভীন আক্তার, শামীম ইমাম, অরুণাভ আশরাফ, জাকিয়া শিশির, বিপ্লব ভট্টাচার্য, আরিফ নুর, সজীব তানভীর, মারুফ হাসান ভূঞা, আফরিন শরীফ, রবিউল করিম ভূঁইয়া, সৈয়দ ফরহাদ, দীপ্তি দত্ত, অভিন্যু কিবরিয়া ইসলাম, মাসুদ খান, নিঘাত রৌদ্র, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, শ্যামলী শীল, নওশাদ এহ্‌সানুল হক, আবদুল্লাহ কাফী রতন, তাসলিমা মিজি, আসমা বেগম, তাহমিনা ইয়াসমিন, কল্লোল মোস্তফা, আহমাদ মোস্তফা কামাল, কামাল হোসেন, অনুপম সৈকত, দীপক সুমন, ফারহানা শারমীন, ফাহমিদুল হক, মুতাসিম আলী, বখতিয়ার আহমেদ ও রেজওয়ান ইসলাম।

এসএসএইচ