রাজধানীর উত্তরার নওয়াব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষককে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। হামলার শিকার শিক্ষক রকিব লিখন অভিযোগ করেছেন, এ হামলার পেছনে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সদস্যদের ইন্ধন রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

আগের একটি বিতর্কের জেরে সহকারী অধ্যাপক রকিব লিখনকে হামলার শিকার হতে হয়েছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধির কক্ষে ঢুকে পেছন থেকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি দিয়ে আঘাত করেন ব্যবসায়িক সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক মিরাজ হোসেন। একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে রকিব মাটিতে পড়ে যান।

তখন অন্য শিক্ষকরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর রকিব লিখনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রকিবের স্ত্রী উত্তরা পূর্ব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

আহত শিক্ষক রকিব লিখন বলেন, ‘মাথার পেছনে সজোরে আঘাত করায় পেছনের এক পাশ ফুলে গেছে এবং ডান হাতেও প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে।’

তিনি জানান, তুচ্ছ ঘটনায় এ হামলা হয়েছে এবং কলেজের কম্পিউটার অপারেটর সবুজও মারার চেষ্টা করেছে, তবে অন্য শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, খণ্ডকালীন শিক্ষক মিরাজ হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন, হারুনুর রশীদ ও বাহাদুর হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কম্পিউটার অপারেটর সবুজ মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। এই সিন্ডিকেট স্থানীয় সাবেক এমপি সাহারা খাতুন, হাবিব হাসান এবং খসরু চৌধুরীর আশীর্বাদপুষ্ট। অভিযোগ রয়েছে, মতের অমিল হলে তারা সমস্যা সৃষ্টি করেন, যার কারণে অন্যরা ভয়ে মুখ খুলতে চান না।

কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হামলার ঘটনায় শিক্ষক মিরাজ হোসেনকে অন্য শিক্ষকরা সম্মিলিতভাবে বয়কট করেছেন।

কলেজের প্রধান শিক্ষিকা মির্জা মাহমুদা বলেন, মিরাজকে সাময়িকভাবে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, ‘আমি মাত্র এক মাস হলো দায়িত্ব নিয়েছি। অভিযোগ সম্পর্কে আমি তেমন জানি না, তবে একটি মহল হয়ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব করছে।’

জানা যায়, কলেজের নতুন গভর্নিং বডি সম্প্রতি গঠিত হয়েছে, যা ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খসরু চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

এনএম/এসএসএইচ