২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় না খুললে ফের আন্দোলনের হুমকি শিক্ষার্থীদের
করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ে খুলে দেওয়া দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। না হয় ফের আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে দেশের ৪৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যাদের বৈঠকে অনলাইনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ‘অবিলম্বে সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলে এ দাবি জানিয়েছে তারা।
বিজ্ঞাপন
বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এ গ্রুপে যুক্ত হয়েছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খোলার দাবিতে অনলাইনে একত্র হচ্ছেন। সেই গ্রুপ থেকে অনলাইনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা আগামী ২৪ মে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একাধিক শিক্ষার্থী শিক্ষামন্ত্রী বরাবর এ আবেদন তাদের গ্রুপে আপলোড করেছেন।
শিক্ষার্থীরা তাদের আবেদনে বলেন, ‘অনলাইনে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানোর মতো কোনো বাস্তবতা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নেই। আমাদের দেশের নেটওয়ার্কব্যবস্থা খুবই দুর্বল, যা দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্পূর্ণই অসম্ভব। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশকে অনলাইন কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। আবার শিক্ষকরাও অনলাইনের সব কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষ নন।’
শিক্ষার্থীরা বলছেন, মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতেই অনলাইন পরীক্ষার নতুন এ পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কাছে উপযুক্ত ডিভাইসের অভাব আছে, ইন্টারনেট খরচ বহন করার সক্ষমতাও সবার নেই। যেখানে অনলাইন ক্লাসগুলোয় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ অনুপস্থিত থেকে যায়, সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আবেদনে আরও বলা হয়, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা আমাদের দাবির কথা সরকারের কাছে ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার জন্য ভার্চুয়াল প্রতিবাদ চালু রাখব। যদি মে মাসের মধ্যে হল-ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করা না হয়, তাহলে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে সরাসরি মাঠে আন্দোলন চালিয়ে যেতে বাধ্য হব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ফরহাদুল হক স্বাধীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ১৪ মাসে একদিন অনলাইনে ক্লাস পর্যন্ত নিতে পারেনি, সেখানে অনলাইনে পরীক্ষা কীভাবে নেবে? গ্রামে একটি সাধারণ ভিডিও দেখতে গেলে বাফারিং (ইন্টারেটের গতি কম হওয়ার কারণে গতি কম পাওয়া) হয়, সেখানে অনলেইনে পরীক্ষা কীভাবে সম্ভব?
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম হোসাইন বলেন, জীবন থেকে দেড়টি বছর হারিয়ে গেছে। আর কোনো অবস্থায় অপেক্ষায় করতে চায় না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা হলে উঠে এবং ক্লাস-পরীক্ষা দিতে চাই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়াশুনা থেমে নেই। অনলাইনসহ যে যেভাবে পারছে সেভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যেতে পারলেও পরীক্ষা নেওয়ার মত পরিস্থিতি বা সক্ষমতা নেই। কারণ মফস্বল এলাকায় ইন্টারনেটের গতি খুবই ম্লথ
এনএম/এসএম