ভর্তি পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ১৬৯ জন শিশু শিক্ষার্থী। 

শনিবার (১৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এ মানববন্ধন করে শিশু শিক্ষার্থী তারা। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দাবি সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান নেন অভিভাবকরা।

অভিভাবকরা জানান, চলতি শিক্ষাবর্ষে রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয় তাদের সন্তানরা। তারা ৩ মাস ক্লাস করার পর জানতে পারেন বয়স সংক্রান্ত জটিলতায় ভর্তি বাতিল হয় ১৬৯ শিক্ষার্থীর। অথচ তারা স্কুলের নিয়মকানুন মেনে ভর্তি হয়েছে, এমনকি বিভিন্ন পরীক্ষায়ও অংশ নেয়। নিয়ম মেনে বেতনও পরিশোধ করা হয়। কিন্তু শিক্ষাবর্ষের মাঝখানে স্কুলের এমন সিদ্ধান্ত বাতিল করে ভর্তি পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন তারা।

এদিকে এর আগে একই দাবিতে হাইকোর্টে রিট করেন  অভিভাবকরা । তবে হাইকোর্টেও বহাল থাকে ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত।

অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের ভর্তি বাণিজ্য ও দুর্নীতির শিকার তাদের সন্তানরা। দ্রুত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার ব্যবস্থা করতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

জানা যায়, ভিকারুননিসায় ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা (নিজেদের নির্ধারিত) অনুসরণ না করে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণীতে বিধি-বহির্ভূতভাবে ভর্তি হয় ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ১০ জন এবং ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী ১৫৯ জন। বিধি-বহির্ভূতভাবে মোট ১৬৯ শিক্ষার্থী ভর্তি হলে তা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন অন্য দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক। স্কুল কর্তৃপক্ষ এতে সাড়া না দিলে তারা গত ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন।

তাদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট বয়সের বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে স্কুলটিতে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১০ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিকারুননিসা স্কুল কর্তৃপক্ষকে এই ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করতে চিঠি দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এরই প্রেক্ষিতে ওই ছাত্রীদের ভর্তি বাতিল করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরে ভর্তি বাতিলের বৈধতা নিয়ে ১৩৬ জন অভিভাবক আরেকটি রিট করেন। 

এছাড়া ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে গত ২৬ মে দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হয়। ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এ আবেদন করেন।
 
পরে গত ১৪ জুলাই ভর্তি বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

এমএসআই/এমএসএ