বয়স গোপন করে ভর্তি করা হয়েছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিলের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রায়ের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গেলে সেখানেও হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে।

বিষয়টি নিয়ে এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবকরা। আজ অভিভাবকদের পক্ষে তৌহিদুর রহমান নামে একজন প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে এসেছেন।

অভিভাবকরা বলছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এখন বাসায় পড়তে চায় না। তাদের জীবন এখন বিপন্ন হওয়ার উপক্রম। তারা স্কুলে যেতে চায়। এই অবস্থায় তাদের স্কুলে পাঠানোর সকল পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে আমরা দেশের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।

স্মারকলিপিতে অভিভাবকরা বলেন, ভিকারুননিসা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সব নির্দেশনা যথাযথ নিয়ম মেনে ভর্তির আবেদন করি। কর্তৃপক্ষ তা যাচাই-বাছাই করে ভর্তি বিষয়ে অনুমতি প্রদান করে। ভর্তি হয়ে বাচ্চারা ৬ মার্চ পর্যন্ত ক্লাসও করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে আদালতের রায় আসে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জন্ম নেওয়া ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিল করতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা আগে থেকে কিছুই জানতাম না। প্রতিষ্ঠান থেকেও কিছু অবহিত না করে হঠাৎ করেই ভর্তি বাতিল করে আমাদের জানানো হয়। এখন আমরা বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব?

মাউশির ভর্তির সার্কুলার দেখে আমরা আবেদন করি। ৪০ শতাংশ এলাকা কোটাসহ সব নিয়মকানুন মেনেই আমাদের বাচ্চা লটারিতে ভর্তি হয়েছে। সব প্রক্রিয়া মেনে ভর্তি করার পর কেন ভর্তি বাতিল হবে? এর দায় মাউশি ও ভিকারুননিসার। কোমলমতি বাচ্চারা এর জন্য কেন ক্ষতিগ্রস্ত হবে?

তাই আমরা চাই, বাতিল না করে ভর্তি যেন বহাল থাকে সেজন্য হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছি। সেখানে ভর্তি বাতিলের আদেশ বহাল রেখেছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই আমাদের।

জানা গেছে, ভিকারুননিসায় ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা (নিজেদের নির্ধারিত) অনুসরণ না করে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তি হওয়া ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ১০ জন এবং ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী ১৫৯ জনসহ মোট ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল চেয়ে আবেদন করেন একজন অভিভাবক। স্কুল কর্তৃপক্ষ সাড়া না দেওয়ায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। গত ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১০ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।

এরপর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিকারুননিসা স্কুল কর্তৃপক্ষকে এই ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই ছাত্রীদের ভর্তি বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। 

এনএম/এসকেডি