সকাল সাড়ে ১১টায় ছুটির ঘণ্টা বেজেছে। স্কুলে শিক্ষার্থীদের সমাগম কম। যে কয়েকজন আছে, তারাও ব্যাগ গুছিয়ে নামতে শুরু করেছে। অনেকে আবার ছাতা মাথায় অভিভাবকের আঙুল ধরে বাড়ি পথ ধরেছে। সূর্যের প্রচণ্ড তাপে চলতি পথে ঘাম মুছতে মুছতে বাড়ি যাচ্ছে তারা।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মগবাজারে বড় মগবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশে মাঝারি থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। অতীতের তুলনায় এবার এপ্রিল মাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে টানা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সোমবার (২৯ এপ্রিল) দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ছুটির পর ওই স্কুলের এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলে, আম্মুর জন্য অপেক্ষা করছি, আম্মু নিতে এলে বাসায় যাবো। বাসায় যেতে আসতে গরমে অনেক কষ্ট হয়। ঘামে কাপড় ভিজে যায়।

বড় মগবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অনুজিৎ রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক মাস রমজানের ছুটি গিয়েছে। গত ২১ তারিখ থেকে স্কুল খোলার কথা ছিল। কিন্তু মাঝখানে অত্যাধিক তাপপ্রবাহের কারণে আরও এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল। এখন ক্লাস হচ্ছে।

তিনি বলেন, স্বাভাবিক আবহাওয়ায় যেরকম শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকতো, এখন সেটার থেকে কম আছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একেবারেই নেই বলা যাবেনা, তবে স্বাভাবিকের তুলনায় কম।

এই সহকারী শিক্ষক আরও বলেন, সরকারের নতুন শিক্ষা সময়সূচিতে কোনও টিফিন বিরতি নেই। আমাদের স্কুলে বিশুদ্ধ খাবার পানি আছে, তারপরও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তারা নিজেরাই বাসা থেকে পানি নিয়ে আসে। প্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে আসে। কারণ, এখন ড্রিহাইড্রেশনের সম্ভাবনা অনেক বেশি। আমাদের স্কুলে সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত একটানা ক্লাস চলে।

রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে দীর্ঘ ছুটির পর গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরু হয়। রোদ ওঠার আগেই অভিভাবকরা সন্তানকে পৌঁছে দিয়েছেন স্কুলে। গরমে সুস্থ থাকতে দিয়েছেন নানা উপদেশ। ক্লাসের বাইরে বের না হতে, মাঠে খেলাধুলা না করতে এমনকি বন্ধুদের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি না করার জন্যও সতর্ক করেছেন তারা।

এদিকে স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরুর একদিন পরই তাপপ্রবাহের কারণে সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে বন্ধ নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

এমএইচএন/এমএসএ