নতুন শিক্ষাক্রম
২০২৬ সালের এসএসসিতে ৫০ নম্বর লিখিত, বাকি মূল্যায়ন হাতে-কলমে
নতুন কারিকুলামে ২০২৬ সালে প্রথমবারের মতো এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার যারা নবম শ্রেণিতে আছে তারা প্রথমবারের মতো নতুন কারিকুলামে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। নতুন কারিকুলামে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ওপর ভিত্তি করে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেখানে ৫০ শতাংশ নম্বরবিহীন লিখিত পরীক্ষা রাখা হয়েছে। বাকি অর্ধেক অংশের মূল্যায়ন হবে হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে। তবে সেই পরীক্ষার নাম এসএসসি থাকবে নাকি অন্য কোনো নাম হবে, তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
সোমবার (১ এপ্রিল) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে গঠিত কমিটির দ্বিতীয় সভায় পরীক্ষা পদ্ধতি চূড়ান্ত করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ২৪ মার্চ শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির খসড়া নিয়ে প্রথম বৈঠক হয়। বৈঠকের খসড়া অনুযায়ী, শ্রেণিভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়া হবে বছরে দুটি। প্রতি বিষয়ে ৫ ঘণ্টার লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। আগের পদ্ধতিতে আর পরীক্ষা হবে না। পরীক্ষাকে এখানে ‘মূল্যায়ন’ বলা হবে।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সোমবার দ্বিতীয় সভা হয়েছে। সেখানে এসএসসির নম্বর বিভাজন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে ৫০ শতাংশ নম্বরবিহীন লিখিত পরীক্ষা রাখা হয়েছে। বাকি অর্ধেক অংশের মূল্যায়ন হবে হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে। তবে সেই পরীক্ষার নাম এসএসসি থাকবে নাকি অন্য কোনো নতুন নাম হবে, তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নের রূপরেখা অনুযায়ী, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসসি পরীক্ষার মতো পাবলিক পরীক্ষা বা মূল্যায়নে হাতে-কলমে কাজের পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষাও থাকবে। তবে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেওয়ার ধরন এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর হবে না। একজন শিক্ষার্থী শিক্ষাক্রম অনুযায়ী যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করবে, সেগুলোই মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে হবে। আর অনুসন্ধান, প্রদর্শন, মডেল তৈরি, উপস্থাপন, পরীক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয়ের মাধ্যমে হাতে-কলমে মূল্যায়ন হবে।
মূল্যায়ন পদ্ধতির খসড়া অনুযায়ী, শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে এক কর্মদিবসের সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টায়। বিরতি দিয়ে হবে এ মূল্যায়ন। লিখিত পরীক্ষা বিষয়ভেদে এক ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টাও হতে পারে।
বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, যেহেতু নতুন শিক্ষাক্রমে নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে না। তাই লিখিত ও হাতে-কলমে কাজের অংশে কত শতাংশ মূল্যায়ন হবে, সেটি নিয়ে আলোচনা করে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন কারিকুলামে পরীক্ষা পদ্ধতি ফেরাতে ১৪ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই কমিটি মূল্যায়ন পদ্ধতির একটি খসড়া তৈরি করে। তাতে বলা হয়, এসএসসি পরীক্ষার মতো পাবলিক পরীক্ষা বা মূল্যায়নে হাতে-কলমে কাজের পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষাও রাখা হবে। এ লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেওয়ার ধরন এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর হবে না।
২০২৩ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের তিনটি শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম চালু করা হয়। এবার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশই শিখনকালীন। অর্থাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে ক্লাসে মূল্যায়ন করছেন শিক্ষকরা।
এনএম/এসএসএইচ