ইংরেজি মাধ্যম ও ইংরেজি ভার্সন স্কুলের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড। সারা দেশের ৮৫টি স্কুলের ১২০টি শাখার ১৬৩০ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ত্রয়োদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উত্তরায় ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল প্রাঙ্গণে ত্রয়োদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কবিতা আবৃত্তি করেন এবং বক্তব্য দেন একুশে পদকজয়ী আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা। স্বাগত বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিন।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় প্রতিযোগীরা রচনা লেখা, আবৃত্তি, নাচ, গান, অঙ্কন, কুইজ ও উপস্থিত বক্তৃতা বিষয়ে বয়সভেদে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

বাংলা অলিম্পিয়াডের উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. হাকিম আরিফ।

রচনা, আবৃত্তি, সংগীত, চিত্রাঙ্কন, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, নৃত্য এবং বাংলা কুইজ– সাতটি বিভাগে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে ছিলেন দেশসেরা কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-শিক্ষাবিদরা। একুশে পদকপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা, রূপা চক্রবর্তী, বিশিষ্ট অভিনেতা ও আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ডালিয়া আহমেদ, মাহিদুল ইসলাম, মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, একুশে পদকজয়ী বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ, শামীম আরা নীপা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন মনিরা পারভীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক ড. সৈয়দ রেজাউল করীম, নারায়ণগঞ্জ আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ শামসুল আলম আজাদ এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের শিল্পী তন্ময় শেখ, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরিচালক মো. নেয়ামত উল্লাহ এবং নায়েমের সাবেক পরিচালক ড. মো. আতিকুল ইসলাম পাঠান, বিশিষ্ট শিল্পী এবং সংগীত শিক্ষক পদ্মিনী ইমন, প্রীতি ঘোষ, দেবাশিস দেব প্রমুখ বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিন বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে এত বড় একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আমাদের স্কুল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এরই মধ্যে বাংলা অলিম্পিয়াড ইংরেজি স্কুলগুলোর একটি জাতীয় প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। শুধু জাতীয় নয়, আমি বলব, বাংলা অলিম্পিয়াড ছড়িয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। প্রতি বছরই দেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলের বিদেশি শিক্ষার্থীরা বাংলা অলিম্পিয়াডে যোগ দিচ্ছে। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের ইংরেজি মাধ্যম ও ইংরেজি ভার্সন স্কুলগুলো ভাষার মাসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

বাংলা অলিম্পিয়াডের সমন্বয়ক কামরুল আহসান বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে আয়োজিত বাংলা অলিম্পিয়াড দেশের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি তাদের যে ভীতি ও বিতৃষ্ণা ছিল, সেটা বাংলা অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে অনেকটাই কেটে গেছে। এখন দেশের বড় বড় স্কুলগুলো সারা বছর আমাদের বাংলা অলিম্পিয়াডের জন্য অপেক্ষায় থাকে। বাংলা অলিম্পিয়াডে পুরস্কৃত হওয়া ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বিরাট সম্মানের একটি অর্জন বলে বিবেচিত হচ্ছে।

এনএম/এসএসএইচ