তীব্র শীতে বিভিন্ন জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
মাঘের শীতে কাবু হয়েছে পুরো দেশ। তীব্র শীতের সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রির নিচে। এমন অবস্থায় যেসব জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামবে, সেসব জেলার স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার (২২ জানুয়ারি) দেশের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
রাজশাহীতে প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ
রাজশাহীতে শীতের তীব্রতা বাড়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো। বাদ যায়নি কিন্ডারগার্টেনগুলোও।
রাজশাহীতে গেল সাত দিনের আবহাওয়ার গতি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৯ থেকে ২১ ডিগ্রির ঘরে। সর্বশেষ সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাজশাহীতে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন
রাজশাহীতে শীতের তীব্রতা বাড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী জেলায় ১ হাজার ৫৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ৮০০ কিন্ডারগার্টেন স্কুলও বন্ধ রয়েছে। তীব্র শীতের কারণে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ থাকবে। তবে বিদ্যালয়গুলোতে যথারীতি অন্য কার্যক্রম চালু থাকবে।
পাবনায় সব প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা
তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় পাবনা জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার (২২ জানুয়ারি) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২১ জানুয়ারি) রাতে পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক মোহাম্মদ ইউসুফ রাজা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রোস্তম আলী হেলালী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পাবনার ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, সোমবার (২২ জানুয়ারি) ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে রোববার পাবনার ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শনিবার রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নাটোরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
নাটোরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা থাকায় সোমবার (২২ জানুয়ারি) নাটোরের সব মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে জেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষরিত দুটি নোটিশে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী বলেন, নাটোর জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস একযোগে সোমবারের সব ক্লাস স্থগিত করেছে। তবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকবে।
নওগাঁর সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ
তীব্র শীতে নওগাঁয় স্থানীয়দের জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। তাপমাত্রার পারদ নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রির নিচে। চলমান মৃদু শৈত্য প্রবাহে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডার পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী সোমবার (২২ জানুয়ারি) জেলার প্রাথমিক পর্যায়ের ১ হাজার ৩৭৪টি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান।
নওগাঁ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, চলমান শৈত্য প্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে আগামীকাল সোমবার (২২ জানুয়ারি) তাপমাত্রা আবারও ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকবে। তাই জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রা অব্যাহতভাবে ১০ ডিগ্রির নিচে থাকলে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হবে।
লালমনিরহাটে বন্ধ প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়
সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর, যা এই মৌসুমের জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শীতের তীব্রতা বেড়ে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় জেলার সব মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কালীগঞ্জ কেইউপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশিদুজ্জামান আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলে আবারও চালু করা হবে।
এমএসএ