২০২৪ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির জন্য মনোনয়ন পেয়েছে তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থী। আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে ভর্তি হতে পারবে এসব শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের জন্য আরও দুটি অপেক্ষামান তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা প্রথম তালিকা থেকে যারা ভর্তি হবে না সেসব শুন্য আসনে সিনিয়াল অনুযায়ী তারা ভর্তি হতে পারবে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বোতাম টিপে লটারি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এরপর শুরু হয় দৈবচয়ন পদ্ধতিতে লটারি। সম্পূর্ণ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী ডিজিটাল লটারির উদ্ধোধন করার পর সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিতে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে প্রথম ধাপে তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে নির্বাচন করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে এক লাখ ৩৯ জন শিক্ষার্থী। আর বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে দুই লাখ ৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে অপেক্ষমানদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, দেশের ৬৫৮টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শূন্য আসন ছিল এক লাখ ১৮ হাজার ১০১টি। বিপরীতে আবেদন করেছিল পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ১৩ জন। তাদের মধ্যে প্রথম দফায় এক লাখ ৩৯ জনকে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ হাজার ১১ জন ছাত্র ও ৪৭ হাজার ২৬ জন ছাত্রী। তৃতীয় লিঙ্গের রয়েছে দুইজন।

অন্যদিকে, বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী। দেশের মহানগর ও জেলা সদর পর্যায়ের তিন হাজার ১৮৮টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে তারা ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শূন্য আসন রয়েছে ১০ লাখ তিন হাজার ৯৯৩টি।

লটারি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল দ্বৈবচয়ন পদ্ধতি সম্পূর্ণ সফটওয়্যারভিত্তিক হওয়ায় শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে। প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আমরা অনেক আগেই লটারি চালু করেছিলাম। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় নিয়ে প্রথম থেকে নবম পর্যন্ত সব শ্রেণিতে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় লটারির মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যে অশুভ প্রতিযোগিতা তা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। একই সঙ্গে কমছে বৈষম্যও।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে লটারি উদ্বোধন ও ফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। এতে সভাপতিত্ব করেন মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।

যেভাবে ফল জানা যাবে

লটারির ফলাফল ই-মেইলে স্কুল প্রধানদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে মাউশি। আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে কে কোন স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, তা আবেদনের সময় তাদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে মনোনীত সবাই এসএমএস পাবে।

ওয়েবসাইট ও এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে। ওয়েবসাইটে ফলাফল দেখতে gsa.teletalk.com.bd এই লিংকে প্রবেশ করতে হবে। আর এসএমএসে ফল পেতে GSA লিখে স্পেস দিয়ে Result লিখে স্পেস দিয়ে User ID লিখে ১৬২২২ নম্বরে সেন্ড করতে হবে। ফিরতি এসএমএসে শিক্ষার্থী জেনে যাবে, সে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

অন্যদিকে, যেসব শিক্ষার্থীরা চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়নি, তাদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে অপেক্ষমাণ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ অপেক্ষমাণ তালিকাও আজই প্রকাশ করবে মাউশি। নির্ধারিত ওয়েবসাইট ও মাউশির ওয়েবসাইটে এ তালিকা পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে ভর্তি শুরুর তারিখ ও অন্যান্য নির্দেশনাও শিগগিরই জানিয়ে দেবে মাউশি।

এনএম/কেএ