ফাইল ছবি

দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকা চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তদের ফল প্রকাশ করতে যাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। আগামী সপ্তাহে এ ফল প্রকাশ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সচিব।

এনটিআরসিএ সচিব ওবায়দুর রহমান শুক্রবার ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। আশা করছি আগামী সপ্তাহে যেকোনো দিন চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, আইনি জটিলতা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষা। আগামী রোববার আমরা অনুমতি চাইব। অনুমতি দিলেই যেকোন দিন ফল প্রকাশ করতে পারব। সেটি আগামী সপ্তাহেই সম্ভব।  

সংশ্লিষ্টরা জানান, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষক সংকট দূর করতে ২০২২ সালে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৩২ হাজার প্রার্থীকে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে সনদ যাচাই এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণের মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানোয় চূড়ান্ত সুপারিশ প্রক্রিয়ায় ধীরগতি এসেছে। এরমধ্যে একজন শিক্ষার্থী আদালতে রিট করলে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশে নতুন সংকট তৈরি হয়। তবে সব জটিলতা কাটিয়ে আগামী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত সুপারিশের অনুমতির জন্য যাবে এনটিআরসিএ। 

• ৬৭৬ শিক্ষকের বেতন বন্ধ করল মাউশি

নিয়োগ প্রত্যাশীরা জানান, স্কুল-কলেজে এক দিকে শিক্ষক সংকট স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে চূড়ান্ত সুপারিশ না হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর। প্রাথমিক সুপারিশের ফল প্রকাশ করা হয় ২০২৩ সালের ১২ মার্চ। ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়। এর পর ১ম থেকে ৫ম নিবন্ধন প্রার্থীদের কাগজপত্র যাচাই, আইসিটি পদের প্রার্থীদের সনদ যাচাই, সহকারী মৌলভি প্রার্থীদের সনদ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই, সহকারী মৌলভী ও আইসিটি পদ ব্যতীত অবশিষ্ট প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ যাচাই, অনলাইন পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম দাখিল করার সময় বৃদ্ধি করা হয়।

২০২৩ সালের ২৭ জুলাই অনলাইনে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ আবেদন নেওয়া শেষ হওয়ার পরেও ৯০০ এর বেশি প্রার্থী পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণে ভুল করায়,আবারও সময় বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।

শিক্ষকরা জানান, একটি নিবন্ধন পরীক্ষা ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি শেষ করে চূড়ান্ত শিক্ষক নিয়োগ, এরপর প্রতিষ্ঠানের যোগদান ও এমপিওভুক্ত হতে একজন চাকরিপ্রার্থীর ৫ থেকে ৬ বছর লেগে যায়। এরমধ্যে প্রাথমিক সুপারিশের পরও যদি ৫-৬ মাস লেগে যায় তাহলে চূড়ান্ত সুপারিশ পেতে তখন নিয়োগের প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হয়। 

• দুই হাজার শিক্ষক নিয়োগে ‘বিশেষ উদ্যোগ’

৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশী আবু মূসা বলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চাকরি করি। সব ধাপ শেষ করে এখন চূড়ান্ত নিয়োগের অপেক্ষা করতে করতে ছয় মাস হয়ে গেল। অপেক্ষার লম্বা সময় যেন শেষ হতে চায় না। 

তিনি জানান,  বর্তমানে দেশের কম বেশি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট রয়েছে। বিপুলসংখ্যক শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক সংকট দূর করতে সরকারকে এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করার দাবি জানান তিনি।

এনএম/এনএফ