ফাইল ছবি

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা সুষ্ঠু, প্রশ্নফাঁস ও গুজবমুক্ত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে পরীক্ষা সময় সারা দেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত অন্যতম। সোমবার (১৪ আগস্ট) থেকে তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলাকালীন মোট ৪৩ দিন কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

রাজধানীর তেজগাঁও নবম-দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের কোচিং করায় তানভীর সাইন্স একাডেমিক কোচিং সেন্টার। এ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মেহেদি হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা মেনে আজ থেকে আমরা কোচিং সেন্টার বন্ধ। অন্যান্য ক্লাসগুলো কোচিংয়ের কি হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। অন্যান্য ক্লাসে কোচিং এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শুরু হবে।

আইডিয়াল একাডেমিক কোচিং সেন্টারের কর্ণচার শাহাদাত হোসেন ঢালী বলেন, আজ থেকে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা মানতে আমরা বাধ্য। কারণ প্রশাসন থেকে কোচিং সেন্টার মনিটরিং করতে আসে। কোচিং সেন্টার খোলা পেলে জরিমানা করে। তাই সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখছি।

গত ৮ আগস্ট আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির’ সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আসন্ন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ১৪ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আসন্ন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ১৪ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। নানা ধরনের কোচিং সেন্টার চলে। কোচিং সেন্টারগুলোতে একাডেমিকসহ নানা ধরনের কোচিং হয়। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত এই ৪৩ দিন সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। 

৩০ মিনিট পূর্বে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে

অন্যান্য বছরের মতো এবারও পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে এর পরে প্রবেশ করতে দিলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিখে প্রবেশ করবে। তবে তার এ দিনের দেরিতে প্রবেশের কারণ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের প্রতিবেদন দিতে হবে।

স্মার্ট ফোন নিয়ে কেন্দ্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

পরীক্ষা হল থেকে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবারও স্মার্ট ফোন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে শিক্ষাবোর্ড। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতীত অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন (তবে ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন)

পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ (যেমন পরীক্ষার্থী, কক্ষ পর্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ব্যতীত) অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা

এইচএসসি, এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা ইন কমার্স ও আলিম পরীক্ষা। রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

রোববার (১৩ আগস্ট) ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ব্যতীত জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ আদেশ আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনগুলোতে পরীক্ষা চলাকালীন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। শিক্ষামন্ত্রণালয় বলছে, এই আদেশ শুধু রাজধানীসহ সারাদেশে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো মানতে হবে।

এনএম/এসএম