আবারও প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে পরীক্ষা বন্ধ হলেও ভিন্ন আঙ্গিকে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন সভার সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
 
এ বিষয়ে তিনি বলেন, বৃত্তি পরীক্ষা না থাকলেও ভিন্ন আঙ্গিকে মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে। তবে বৃত্তি প্রদানে কী কী মানদণ্ড থাকবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত এটুকুই জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের নোট-গাইড আর কোচিং নির্ভর পড়াশুনা বন্ধ করে, যুগোপযোগী শিক্ষা এবং প্রতিনিয়ত ক্লাসেই মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা অনুসারে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে চালু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম। যা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতেও বাস্তবায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রথাগত পরীক্ষাকে কম গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত তিন বছর ধরে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। আগামী দিনেও আর এ পরীক্ষা হচ্ছে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এদিকে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাও না নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পিইসি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, দীর্ঘ ১৩ বছর পর ২০২২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করা হয়েছিল।

এমন পরিস্থিতিতে, প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা কোচিংমুখী হয়ে পড়ে। তাদের কোচিং-নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে শেষ পর্যন্ত প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষাও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা চালুর পর থেকেই তৃণমূল থেকে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। এর ফলে প্রাথমিক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমেছিল। এমনকি অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয় ২০০৮ সালে। এরপর ২০০৯ সালে পিইসি পরীক্ষা চালু হয়। এই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হতো। এরপর পিইসি পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণার ১৩ বছর পর গত বছর আবার প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছিল। মূলত পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় যারা ২৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেত তারাই এই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেত।

এমএম/এসএম