কারিগরি ত্রুটির কারণে স্থগিত হওয়া প্রাথমিকের বৃত্তির ফল আজ (১ মার্চ) রাতের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে স্থগিত হওয়া প্রাথমিকের বৃত্তির ফল বুধবার (১ মার্চ) বিকেলের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. উত্তর কুমার দাশ। তিনি জানান, যেসব সমস্যার কারণে ফল স্থগিত হয়েছিল, সব সমস্যার চিহ্নিত করে সমাধান করা হয়েছে। আশা করছি আজ বিকেলের মধ্যেই পুনরায় ফলাফল প্রকাশ করতে পারবো।

এদিকে সবকিছু প্রস্তুত থাকার পরেও ফলাফল অধিকতর যাচাইয়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ( বুয়েট)। বিকেলে মহাপরিচালকের নেতৃত্বে টেকনিক্যাল কমিটি বুয়েটে যান।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মতে যাচাই-বাছাই শেষে ফল প্রকাশের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যেকোনো সময় ফল প্রকাশ করা হবে।

পরিচালক উত্তর কুমার দাশ বলেন, আগে ২০০৯ সালে সর্বশেষ এ ধরনের বৃত্তির ফল তৈরি হয়েছিল। দীর্ঘ ১২ বছর পর এবার প্রায় একই ধরনের বৃত্তির ফল তৈরি হয়েছে। এবার বিষয়সহ বেশ কিছু জিনিস নতুনত্ব ছিল। এতে কোডিং সংক্রান্ত একটু সমস্যা তৈরি হয়েছিল, যা ইতোমধ্যে সমাধান হয়ে গেছে। ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ফলাফলে এ ধরনের সমস্যা হয়েছিল। সরকারি কর্মকমিশনের ফলে একবার এমন সমস্যা হয়েছিল। এ ধরনের সমস্যা সাময়িক, ফলাফল তৈরিতে কোনও সমস্যা হয় না বলেও জানান তিনি।

তার দাবি, এই প্রযুক্তিগত সমস্যা এর আগে কখনো হয়নি ডিপিইতে। এটা আমাদের একটা লার্নিং।  ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করবে কমিটি।

এদিকে ঘটনা তদন্তে চায় সদস্যের কমিটিও কাজ শুরু করেছে। তারা এই ফল তৈরি সঙ্গে যুক্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কমিটির একজন সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে কারও গাফিলতি ছিল এরকম কোনও প্রমাণ আমরা পায়নি। এটা নিছক কারিগরিটির ত্রুটির কারণে হয়েছে।

তিনি জানান, আজকের মধ্যে চেষ্টা করব পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন মহাপরিচালকের কাছে জমা দিতে।

যেভাবে বৃত্তির ফল তৈরি হয়
ফল তৈরি সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের পর জেলা শিক্ষা অফিসে শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্রে কোড দেওয়া হয়। এরপর শিক্ষকরা সেই খাতা মূল্যায়ন করেন। ফলে কার খাতা কোনটি তা বোঝা যায় না। কিন্তু মূল্যায়নের পর প্রাপ্ত নম্বর কোড অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন নম্বরে যোগ হয়। শেষের প্রক্রিয়াকে বলা হয় ডিকোডিং। এই কোডিং এবং ডিকোডিং প্রক্রিয়ায় ভুল হয়েছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপাসহ কয়েকটি উপজেলায় সব শিক্ষার্থীকে একই কোড নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে ডিপিইর কম্পিউটার সেলে ধরা পড়েছে। এ কারণে সারা দেশের ফল পুনরায় যাচাই করার জন্য ফল স্থগিত করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৃত্তি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। পরে সন্ধ্যায় বৃত্তির ফল স্থগিত করা হয়। এতে দেখা গেছে, এবার বৃত্তি পেয়েছে ৮২ হাজার ৩৮৩ শিক্ষার্থী। প্রতিমন্ত্রী জানান, এবার ট্যালেন্টপুলে (মেধা বৃত্তি) ৩৩ হাজার ও ৪৯ হাজার ৩৮৩ জন শিক্ষার্থী সাধারণ বৃত্তি পেয়েছে।

এনএম/এসএম