পঞ্চম দিনেও সাড়া পাননি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
অবশিষ্ট বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে পাঁচ দিন যাবৎ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক মহাজোটের শিক্ষকরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষকরা গত ১০ মার্চ থেকে এখানে অবস্থান নিয়েছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সাড়া মেলেনি।
এ বিষয়ে মহাজোটের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিউর রহমান বলেন, ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে, ২০১২ সালের ২৭ মের আগে আবেদন করা প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আসবে। এ প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সে সময় যোগ্যতা থাকায় জাতীয়করণের জন্য তৃতীয় ধাপে ৯৬০টি বিদ্যালয়ের বাইরে আরও চার হাজারের বেশি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তথ্য চাওয়া হয়। পরে ওই চার হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে আসা হয়নি।
তিনি বলেন, এরপর আমরা বাংলাদেশে বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে গত ২০১৮ সালে ১৮ দিন ও ২০১৯ সালে ৫৬ দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অনশন কর্মসূচি পালন করি। ওই সময়ে একজন শিক্ষক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ইতোমধ্যে সারাদেশে ১০ জন বেসরকারি শিক্ষক মারা গেছেন। এদের পরিবারের অবস্থা এখন খুবই খারাপ।
যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ২০১২ সালের ২৭ মে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় বাংলাদেশে আর কোনো বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকবে না। কিন্তু এর আগের সময়ে থাকা বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আওতায় আনা হচ্ছে না কেন?
তিনি বলেন, আমরা তো ওই ঘোষণার পরে কোনো বিদ্যালয়ের জাতীয়করণ চাচ্ছি না। আমাদের দাবি তো ন্যায্য দাবি। তাহলে এভাবে অসহায়ের মতো আমাদের রাখা হয়েছে কেন? দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে যাব না।
অন্যান্যরা বলেন, আমরা খুবই খারাপ সময় পার করছি। কোনোভাবেই আর টিকে থাকতে পারছি না। এতো কঠিন সময় শিক্ষকদের পার করতে হবে তা কোনোদিন ভাবিনি। আমরা তো শিক্ষকতা করছি। শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছি। তাহলে আমরা কেন সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হব?
তারা বলেন, আমাদের সবার পরিবার রয়েছে। এই পরিবার আমাদের চালাতে হয়। আমি যদি আয় করতে না পারি তাহলে কীভাবে পরিবার চালাব? আমাদের দোষ কোথায়? আমরা তো সরকারি নিয়মের মধ্যেই আছি।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি চলবে। পাঁচদিন যাবৎ অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সাড়া মেলেনি। অবস্থান কর্মসূচিতে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত আছেন।
এমএইচএন/এইচকে