গ্রিন ইউনিভার্সিটি : শিক্ষার্থীবান্ধব এক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান
গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। শুরুটা ২০০৩ সালে হলেও অগ্রযাত্রা মূলত ২০১১ থেকে। ইউএস-বাংলা গ্রুপ দায়িত্বগ্রহণের পর প্রতিষ্ঠানটির নামের সঙ্গে ‘কোয়ালিটি এডুকেশন’ শব্দটি যেমন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত হয়েছে, তেমনি উন্নত ভৌত-কাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিশা পেয়েছে এখানকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সেই গল্পই তুলে ধরা হলো-
উন্নত জাতির দর্পণ হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সমৃদ্ধ ও উন্নত আগামী গড়তে বর্তমানে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা নয়, বরং এর মানোন্নয়ন এবং আধুনিকায়নও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ সে কাজটিই করছে প্রায় ২ দশক ধরে।
বিজ্ঞাপন
অভিজ্ঞ, দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক
যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়। মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের পর তাদের শিক্ষাদান দক্ষতা বাড়াতে আছে নিয়মিত প্রশিক্ষণ। এই ধারা গ্রিন ইউনিভার্সিটি ছাড়া দেশের মাত্র দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু আছে।
প্রশিক্ষণ জগতের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বর্তমানে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাবেক এই উপ-উপাচার্য দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের এসআইটি গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউটে ‘ভিজিটিং প্রফেসর’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক আছেন উপ-উপাচার্য হিসেবে। টেক্সটাইলের ওপর দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ‘বুটেক্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য (সাবেক) অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র সূত্রধরের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে গ্রিনের টেক্সটাইল বিভাগ।
আইইবি অ্যাক্রেডিটেশন
অভিজ্ঞ শিক্ষক, মানসম্মত ল্যাব, লাইব্রেরি ও শ্রেণিকক্ষ পরিচালনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) কর্তৃক অ্যাক্রেডিটেশন পেয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটির ‘কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই)’ ও ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ। বাংলাদেশে যতগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে; এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আইইবি স্বীকৃতির আওতাভুক্ত।
স্কলারশিপে বিদেশে পড়ার সুবিধা
গ্রিন ইউনিভার্সিটির কার্যক্রম বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ছাত্র-শিক্ষক বিনিময় এবং যৌথ গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব রেজিনা, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব হাডারস্ফিল্ড, চীনের বেইজিং ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচারাল ইউনিভার্সিটি (বিএলসিইউ), উহান টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি ও মালয়েশিয়ার বাইনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে আইইএলটিএস, চাইনিজ এবং জাপানিজ ভাষার ওপর বিশেষ সার্টিফিকেট কোর্স রয়েছে; যেটা সম্পন্ন করে সহজেই এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।
‘ক্যারিয়ার’ গড়তে সহায়তা
গ্রিনই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়- যারা প্রত্যক্ষভাবে তাদের গ্রাজুয়েটদের কর্মক্ষেত্র নির্ধারণে সহায়তা করছে। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চশিক্ষা শেষে প্রতিবছর যত শিক্ষার্থী চাকরির প্রতিযোগিতায় নামছে, সে তুলনায় দেশে শূন্যপদের সংখ্যা অনেক কম। মূলত এ চিন্তা থেকেই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। ইউএস-বাংলা গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সিজিপিএ (৩.৫০) ও ইংরেজিতে দক্ষ হলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসহ গ্রুপটির ১০টি প্রতিষ্ঠানে নিশ্চিতভিত্তিতে চাকরি পাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির গ্রাজুয়েটরা।
শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনে গ্রিনের আরও একটি বড় উদ্যোগ হলো- প্রফেশনাল লাইফ স্কিল ডেভেলপমেন্ট (পিএলএসডি) কোর্স। যার মূল উদ্দেশ্যই শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনে সহায়তা করা। পাশাপাশি ‘স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট’ ক্লাসের মাধ্যমে গ্রাজুয়েটদের চাকরি পাওয়ার হতাশাও দূর হয় এই কোর্সের মাধ্যমে।
এর বাইরেও গ্রাজুয়েটদের চাকরি সুবিধা দিতে গড়ে তোলা হয়েছে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিসিডি)। যে সেন্টারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দেশি-বিদেশি কর্মক্ষেত্রে আবেদনের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত চাকরি বেছে নিতে পারছেন গ্রিনের শিক্ষার্থীরা।
নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস
ঢাকার সন্নিকটে পূর্বাচল আমেরিকান সিটির নান্দনিক পরিবেশে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। যার শিক্ষা কার্যক্রম দু’বছর আগেই শুরু হয়েছে। চলছে ভর্তি কার্যক্রম, নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ড। ক্যাম্পাসটিতে যেতে রাজধানীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা রেখেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোয়ালিটি এডুকেশনের সঙ্গে উন্নত ভৌত অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করতেই গড়ে তোলা হয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস। শুধু তাই নয়, জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের অধিক যোগ্য করে তুলতে শিক্ষা সংক্রান্ত সব উপকরণই এখানে আছে। নতুন ক্যাম্পাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝেও বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
অনলাইন শিক্ষায় এগিয়ে
করোনাকাল শুরুর কিছুদিন পরই ইউজিসির নির্দেশনা মেনে অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। এর আগে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বিডিরেনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী অনলাইন ক্লাস পরিচালনায় পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দ্বিতীয়তে আছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। ক্লাস ছাড়াও সব ধরনের শিক্ষাসেবা নিশ্চিত করছে অনলাইনের মাধ্যমে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, নিউ নরমাল বিশ্ব এমনিতেই অনলাইন দুনিয়াকে সামনে নিয়ে এসেছে। সেটিকে মাথায় রেখেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে আইকিউএসি
গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত মান বাড়ানোর জন্য আইকিউএসি চালু আছে। এই সেলের অধীনে শিক্ষা কার্যক্রমের কোর্স প্রণয়ন, শিক্ষাদানে নতুনত্ব আনা, দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর মানোন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান ছাড়াও সব সুবিধা নিশ্চিত করতে নানা ধরনের কাজ করছে।
ইংরেজিতে অধিক গুরুত্ব
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটির। সে হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতি সেমিস্টারে ‘বুক রিডিং কম্পিটিশন’ আয়োজন করে থাকে ব্রিটিশ কাউন্সিল। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ইংরেজির প্রতি অধিক মনযোগী হন। প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর বাধ্যতামূলকভাবে করতে হয় ‘ইংলিশ ফর অ্যাকাডেমিক পারপাস (ইএপি)’ কোর্স। তাছাড়া কোর্স কারিকুলাম থেকে শুরু করে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ, ইন্টার ডিপার্টমেন্ট ডিবেট কম্পিটিশন, প্রেজেন্টেশন কম্পিটিশন, করপোরেট লেকচারসহ অধিকাংশ অনুষ্ঠানগুলো ইংরেজিতে পরিচালনা করাও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কাজ। এছাড়াও ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়াতে প্রতিদিন দুই শতাধিক ইংরেজি পত্রিকা রাখা হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
শিক্ষক-কর্মকর্তার অনুদানে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ফান্ড
গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রিন ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হলো ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফান্ড’ গঠন। যে ফান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা মাসের শুরুতে নির্দিষ্ট পরিমাণ (সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে শুরু) টাকা প্রতি মাসে দিয়ে থাকেন। গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রত্যেক সেমিস্টারে এই ফান্ড থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন। পুরো বিষয়টি দেখভালের জন্য একটি কমিটিও গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
স্টুডেন্ট মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম
মানসম্মত শিক্ষার্থী নিশ্চিত করতে ‘স্টুডেন্ট মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম’ বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে নবাগত ছাত্র-ছাত্রীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য সিনিয়র শিক্ষার্থীরা উপদেশ-পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যে ধারা প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়। এরপর ২য় সেমিস্টার থেকে শুরু হয় একাডেমিক অ্যাডভাইজিং। এর মাধ্যমে বিভাগীয় শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ যোগাযোগ করে থাকেন। যা পরবর্তী চার বছর পর্যন্ত চলতে থাকে। এছাড়া ৬ সেমিস্টার পর যেসব শিক্ষার্থীদের সিজিপিএ ৩.৫ বা তার অধিক, তাদের নিয়ে ৭টি মডিউল সমৃদ্ধ এবং এক বছর মেয়াদী গ্রিন ইউনিভার্সিটি ইনিশিয়েটিভ ফর ফিউচার ট্রান্সফরমার (গিফট) নামক একটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানের খেলার মাঠ
গ্রিন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে রয়েছে ইনডোর এবং আউটডোরে খেলাধুলার সব আয়োজন। এজন্য স্থায়ী ক্যাম্পাসে গড়ে তোলা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের বিশাল খেলার মাঠ। আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাঠটির ব্যাসার্ধ ৭০ থেকে ৮০ মিটারের মধ্যে রাখা হয়েছে। যদিও পুরো মাঠের আয়তন আরও বেশি। ক্রিকেট পিচ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে। আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামগুলোর পিচে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়, এখানেও তাই করা হয়েছে।
নকশা অনুযায়ী মাঠটির দৈর্ঘ্য ৫০০ ফুট ও প্রস্থ ৪০০ ফুট। চারপাশে রয়েছে ঘাসে মোড়ানো দর্শক গ্যালারি। এর মধ্যে দক্ষিণ পাশে গ্যালারিতে থাকছে খেলোয়াড়দের বসার স্থানসহ অন্য অনুষঙ্গ।
আছে ১৭টি ক্লাব
শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রম বেগবান রাখতে গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মোট ১৭টি ক্লাব। এগুলো হলো ডিবেটিং ক্লাব, গ্রিন বিজনেস ক্লাব, মার্কেটিং ক্লাব, ইংরেজি ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব, ল’ ক্লাব, সোশ্যাল বন্ডিং ক্লাব, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ক্লাব, টেক্সটাইল ক্লাব, কম্পিউটার ক্লাব, জেএমসি ক্লাব, গ্রিন ওয়ারিয়র ক্লাব, রিডিং সোসাইটি, ফটোগ্রাফি ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, থিয়েটার ক্লাব, ব্লাড ক্লাব।
১০ থেকে ১০০ ভাগ ওয়েভার সুবিধা
গ্রিন ইউনিভার্সিটি সব সময়ই গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সচেতন। এসব শিক্ষার্থীর পড়াশোনায় সহায়তার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হলো- এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর সর্বোচ্চ ১০০ ভাগ পর্যন্ত স্কলারশিপ সুবিধা দেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, অপেক্ষাকৃত কম সচ্ছল ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের জন্য ১০০ ভাগ পর্যন্ত টিউশন ফি মওকুফের ব্যবস্থা। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, ছাত্রী, ভাইবোন, স্বামী-স্ত্রী কোটায় আংশিক এবং জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের (ক্রিকেট) সম্পূর্ণ বিনা টিউশন ফিতে লেখাপড়ার সুযোগ দিচ্ছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি।
জাপানে ভর্তিচ্ছুদের জন্য ‘নাট টেস্ট’
জাপানি ভাষায় দক্ষতার আন্তর্জাতিক পরীক্ষা ‘নাট টেস্ট’ বাংলাদেশে একমাত্র গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়। আগে এই পরীক্ষা দিতে শিক্ষার্থীদের নেপাল যেতে হতো। জাপানে পড়াশোনায় ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের এবং ভিসা আবেদনে আগ্রহীদের এ সুযোগ করে দিচ্ছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
যা বললেন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বলেন, গ্রিন ইউনিভার্সিটি তিন মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক্যালি কমপিট্যান্ট দেখতে চাই। অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থী যে বিষয়েই পড়ুক না কেন, তাকে ওই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। একইসঙ্গে তাদেরকে নৈতিক মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন এবং সামাজিক দায়িত্ববোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট।
তিনি বলেন, শিক্ষার এই মান উন্নয়নে গ্রিন ইউনিভার্সিটি পাঁচটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এগুলো হলো- মানসম্মত শিক্ষা, যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী, উন্নত কোর্স কারিকুলাম, দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং উন্নত ভৌত অবকাঠামো।
আমাদের উদ্দেশ্য- নৈতিক মূল্যবোধ ও কর্মমুখী শিক্ষার সমন্বয়ে দেশে প্রজন্ম পরম্পরায় শিক্ষিত, চরিত্রবান ও প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার মত দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা; যারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি নৈতিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। গ্রিন ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের শুধু স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করায় না, পাশাপাশি বাংলা-ইংরেজি অর্থাৎ ভাষাগত দক্ষতা, কম্পিউটার দক্ষতা, সমস্যা সমাধানকারী ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর মতো গুণাবলী অর্জন করতেও সাহায্য করে। আমরা চাই এই প্রতিষ্ঠানের গ্রাজুয়েটদের মধ্যে এমন সব গুণাবলী থাকুক, যাতে কাউকেই পড়াশোনার পর বেকার থাকতে না হয়। আমরা গবেষণা করে দেখেছি, গ্রিন থেকে পাস করে যাওয়া প্রায় ৯০ শতাংশ গ্রাজুয়েট পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেছে। এটা নিঃসন্দেহে বড় সফলতা।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণায় ক্রমাগত উন্নয়নের ফলে শিগগিরই গ্রিন ইউনিভার্সিটির কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে। আউটকাম বেসড এডুকেশন (ওবিই) পদ্ধতিতে পাঠদান গ্রিন ইউনিভার্সিটির বড় অর্জনগুলোর একটি। চলমান শিক্ষায় সিজিপিএ’কে মানদণ্ড হিসেবে ধরা হয়, অন্যদিকে ওবিই শিক্ষায় একাডেমিক ফলাফলের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা নানা দক্ষতা অর্জন করতে থাকে। এ প্রক্রিয়ায় সেমিস্টার বা বছর শেষে একজন শিক্ষার্থী কী শিখল, তা পর্যবেক্ষণ ও পরিমাপ করা যাবে। অর্থাৎ এটা সুনির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জনভিত্তিক শিক্ষা। এখানে একজন শিক্ষক কী পড়াল সেটা মুখ্য বিষয় নয়, বরং শিক্ষার্থী কী জানল-শিখল সেটাই বিবেচ্য বিষয়। গ্রিন ইউনিভার্সিটি আধুনিক শিক্ষার এই পাঠদান প্রক্রিয়া গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যোগ্য করে তুলছে। গবেষণায় ছাত্র ও শিক্ষকদেরকে উৎসাহিত করতে প্রকাশনাভিত্তিক প্রণোদনা প্রদানে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি।
উপ-উপাচার্য আরও বলেন, করোনাকালে গ্রিন ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে বড় সফলতা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজড করা। আমরা অনলাইন ভর্তি, অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা, ভাইভা, কোর্স রেজিস্ট্রেশন, ফলাফল মূল্যায়ন ও প্রকাশ, সার্টিফিকেট ও মার্কশিট প্রদানসহ সব ধরনের সেবা অনলাইনের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটা বড় অর্জন। অগ্রগতির এই ধারা বজায় রেখে অচিরেই গ্রিন ইউনিভার্সিটি দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
এইচকে