৬ দফা দাবি নিয়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশীরা। রোববার সরকারি কর্ম-কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ের সামনে সপ্তম দিনের মতো এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। টানা আন্দোলনের সপ্তম দিন অতিবাহিত হলেও এখনও সাড়া মেলেনি পিএসসির। এতে চরম হতাশ আন্দোলনকারীরা। 

রোববার (৬ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে সরকারি কর্ম-কমিশন (পিএসসি) গেটে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। 

এ সময় আন্দোলনকারী চাকরিপ্রত্যাশীরা ‌‘দাবি মোদের একটাই, নন- ক্যাডার নিয়োগ চাই’,‘ দাবি মোদের একটাই পূর্বের নিয়ম বহাল চাই’, ‘অনৈতিক সিদ্ধান্ত মানি না- মানব না’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়- বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়-বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার- গর্জে উঠুক আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।  

এর আগে কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা দুর্নীতি বিরোধী শপথ পাঠ, মোমবাতি প্রজ্বলন, দড়িতে মুলা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ, পিএসসির সামনে পরিষ্কার অভিযান, মুখে কালো কাপড় বেঁধে ও হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে প্রতিবাদ জানান তারা। তবে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির আজ ৭ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত সরকারি কর্ম-কমিশনের দায়িত্বশীল কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।

আরও পড়ুন : বিসিএস : মেধাবীরা কেন মাঠে?

এছাড়া গত ৩১ অক্টোবর পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন অফিস শেষ করে বের হলে আন্দোলনকারীরা তার গাড়ি অবরুদ্ধ করে শুয়ে পড়েন। পরে আন্দোলন সমন্বয়কদের সিদ্ধান্তে চেয়ারম্যানের গাড়ি বের হতে দেওয়া হয়।

প্রার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো, যেহেতু বিজ্ঞপ্তিতে ৪০-৪৩তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি, সেহেতু বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক বিজ্ঞপ্তির পর ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী নন-ক্যাডার পদ বিভাজনের মাধ্যমে পদ সংখ্যা নির্ধারণের এ বেকার বিরুদ্ধ ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডারের পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

আরও পড়ুন : পিএসসিতে মুলা ঝুলিয়ে নন-ক্যাডার প্রার্থীদের প্রতিবাদ

করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইতিহাসের দীর্ঘকালীন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করাতে হবে।

যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিএসসি ২৯ মার্চ ২০২২ তারিখ পর্যন্ত ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বর্তমান উদ্বুদ্ধ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

বাংলাদেশের শিক্ষিত ও মেধাবী ছাত্রসমাজকে পিএসসির মূল বক্তব্য আড়াল করে অর্থাৎ ‘যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেওয়া হবে’ এই ভিত্তিহীন কথা বলে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং বেকার সৃষ্টির এই অপপ্রয়াস অনতিবিলম্বে বন্ধ করে বেকারবান্ধব নীতি নবায়ন করতে হবে।

বিগত এক যুগে পিএসসি যে স্বপ্ন, নির্ভরযোগ্য ও বেকারবান্ধব প্রতিষ্ঠান ছিল সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

এমএম/এসকেডি