৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের আন্দোলনের সময় পুলিশ সদস্যরা লাঠি দিয়ে দুই চাকরিপ্রার্থীকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে আহতরা এখনো পিএসসির গেটেই অবস্থান করছেন।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বাংলাদেশ সরকারি কর্ম-কমিশনের গেটে ৬ দফা দাবি নিয়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া চাকরিপ্রত্যাশীরা এ অভিযোগ করেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া চাকরিপ্রার্থীরা জানান, আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করলেও পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে আমাদের দুই জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন।  

জানা গেছে, টানা তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির তৃতীয় দিন চললেও এখন পর্যন্ত সরকারি কর্ম-কমিশনের দায়িত্বশীল কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এদিকে দাবি না মানা হলে আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। 

তারা জানান, আমরা ভেবেছিলাম পিএসসির চেয়ারম্যান অন্তত একবার বাইরে এসে আমাদের কথা শুনবেন। আমাদের বলবেন, তোমরা ঘরে ফিরে যাও, তোমাদের সর্বোচ্চ সংখ্যক যেন চাকরি হয় সেই ব্যবস্থা করব। কিন্তু আজ অবস্থান কর্মসূচির তিন দিন হলেও পিএসসির চেয়ারম্যান তো দূরে থাক কেউ আসেনি, খোঁজ নেয়নি।

এর আগে সোমবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন অফিস শেষ করে বের হলে আন্দোলনকারীরা তার গাড়ি অবরুদ্ধ করে শুয়ে পড়েন। পরে আন্দোলন সমন্বয়কদের সিদ্ধান্তে চেয়ারম্যানের গাড়ি বের হতে দেওয়া হয়।

প্রার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো- যেহেতু বিজ্ঞপ্তিতে ৪০-৪৩তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি, সেহেতু বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের বিজ্ঞপ্তির পর ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তির তারিখ ভিত্তিক নন-ক্যাডার পদ বিভাজনের মাধ্যমে পদসংখ্যা নির্ধারণের এই বেকারবিরুদ্ধ ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডারের পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং তারিখ ভিত্তিক পদ বিভাজনের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইতিহাসের দীর্ঘকালীন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করাতে হবে।

যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিএসসি ২৯ মার্চ ২০২২ তারিখ পর্যন্ত ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বর্তমান উদ্বুদ্ধ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

বাংলাদেশের শিক্ষিত ও মেধাবী ছাত্রসমাজকে পিএসসির মূল বক্তব্য আড়াল করে অর্থাৎ ‘যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেওয়া হবে’ এই ভিত্তিহীন কথা বলে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং বেকার সৃষ্টির এই অপপ্রয়াস অনতিবিলম্বে বন্ধ করে বেকারবান্ধব নীতি নবায়ন করতে হবে।

বিগত এক যুগে পিএসসি যে স্বপ্ন, নির্ভরযোগ্য ও বেকারবান্ধব প্রতিষ্ঠান ছিল সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

জেডএস