২০২২ সালেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা
করোনার প্রভাবে বাধাগ্রস্ত শিক্ষাখাত। প্রায় এক বছর পর আগামী ৩০ মার্চ খুলতে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু এ বছরের প্রভাব পড়তে যাচ্ছে আগামী কয়েকটি শিক্ষাবর্ষে। ইতোমধ্যে ২০২০ সালে পিএসই, জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা করে পরবর্তী শ্রেণিতে অটো প্রমোশন দেওয়া হয়েছে।
বিশেষভাবে মূল্যায়ন করে অটোপাস দেওয়া হয় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের। প্রায় ৭০ শতাংশ সিলেবাস কমিয়ে নেওয়া হবে ২০২১ সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা। এরমধ্যে ২০২২ সালে এসএসসি ও এইচএসসিও হবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়ে এ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এদিকে ৯ মাসের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসির সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের কাজ প্রায় শেষ। যেকোনো সময় তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
এ সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত এনসিটিবির একজন ঊর্ধ্বতন কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ বলেন, নবম ও একাদশ শ্রেণিতে যারা অধ্যয়নরত তাদের জন্যও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে যারা নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত তারা ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। তাদের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরির কাজ চলমান।
৩০ শতাংশ কমিয়ে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। একইভাবে যারা ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তাদেরও সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এ দুটি পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস চলতি সপ্তাহের মধ্যে প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে আগামী ২৯ মার্চ পর্যন্ত করা হয়েছে। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়, প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিকের দ্বাদশ পর্যন্ত খোলা হবে আগামী ৩০ মার্চ। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিকে আগের মত নিয়মিতভাবে চলবে না। পঞ্চম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয়দিন ক্লাসে আসতে হবে।
সিলেবাস কমবে ৩০ শতাংশ
অনুমোদন পেতে সিলেবাস যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে
১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। ৯ম এবং একাদশ শ্রেণির সপ্তাহে দুইদিন করে ক্লাস হবে। তারপর পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে একটু একটু করে বাড়িয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় শতভাগ ক্লাস চালু হবে।
ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী জানান, আগামী জুলাই মাসে হয়তো এসএসসি পরীক্ষা নিতে পারবো। মাঝখানে এক মাস বিরতি দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এসএসসি ক্ষেত্রে ৬০ দিবস এবং এইচএসসির ক্ষেত্রে ৮৪ দিবস ক্লাস করার পর সপ্তাহ দুয়েক বিরতি দিয়ে এ পরীক্ষা দুটি নেওয়া হবে।
২০২১ সালে পরীক্ষার জন্য এনসিটিবির বিশেষজ্ঞ এবং এসএসসি-এইচএসসির প্রতিটি বিষয়ের শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দুইদিন করে ওয়াকর্শপ করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। ৪ ফেব্রুয়ারি দুই পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করেছে শিক্ষাবোর্ডগুলো। তাতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিন ক্লাস নির্ধারণ করা হয়। আর বিষয় প্রতি সর্বোচ্চ ৩০ দিবস ক্লাস করার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করে দেওয়া হয়। এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৮৪দিন ক্লাসের সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে ২৫ জানুয়ারি গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এসএসসি সিলেবাস কমিয়ে শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার পর শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, তিন মাসের এ সিলেবাস এক বছরেও শেষ করা সম্ভব নয়। এরপর মন্ত্রী সেই সিলেবাস আরও সংক্ষিপ্ত করে নিদিষ্ট ক্লাস ও দিন উল্লেখ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
এনএম/আরএইচ