পরীক্ষা চলমান রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

শর্তসাপেক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাতটি সরকারি কলেজের চলমান ও ঘোষিত পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হোস্টেল না খোলা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। 

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের অধ্যক্ষদের এক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এই কলেজগুলোতে মোট শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমিয়ে শিক্ষার মান বাড়াতে কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হলেও সমস্যা এখনো দূর হয়নি। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কলেজগুলোর বড় সমস্যা হলো ঠিক সময়ে পরীক্ষা না নেওয়া এবং দেরিতে ফল প্রকাশ করা। এই সমস্যা নিরসনের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সরকারি সাত কলেজের চলমান ২০১৯ সালের স্নাতক চতুর্থ বর্ষ, ২০১৯ সালের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের লিখিত পরীক্ষা এবং ২০১৭ সালের মাস্টার্স শেষ পর্বের মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপরই ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সড়কে নামেন
শিক্ষার্থীরা। এদিকে হল খুলে দেওয়ার দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার রাতেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ১০টার সেদিনের মতো সড়ক ছাড়েন তারা। গতকাল সন্ধ্যায় সাত কলেজের পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসার পর বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল ৯টা থেকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের খামখেয়ালি মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ এই সিদ্ধান্ত। অচিরেই পরীক্ষার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে চলমান পরীক্ষা শেষ করার দাবি জানান তারা।

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০  সালের মার্চ থেকে দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে। পরে জুলাই থেকে অনলাইন, টেলিভিশন কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিকল্প শিক্ষাদানের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা খুব একটা সাফল্য পায়নি। এর মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কমে আসা ও ভ্যাকসিন দেওয়া শুরুর প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আগামী ২৪ মে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে এবং তার আগে ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। 

এনএম/জেডএস