মার্চে জামা-জুতার টাকা পাচ্ছে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা
অবশেষে মার্চ মাসে ‘কিডস অ্যালাউন্স’ হিসেবে এক হাজার টাকা করে পাচ্ছেন প্রাথমিকের এক কোটি ১০ লাখ শিক্ষার্থী। এ টাকা দিয়ে তারা নতুন জামা, জুতা ও ব্যাগ কিনবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় সব শিক্ষার্থীকে এ টাকা দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
প্রাথমিক মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন শাখা সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা উপবৃত্তি ও কিউস অ্যালাউন্সের জন্য ছাড় করা হয়েছে। এ টাকা থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের নিয়মিত ১ কোটি ১০ লাখ শিক্ষার্থীর কিডস অ্যালাউন্স বাবদ প্রায় ১১’শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। এছাড়া উপবৃত্তির তিন কিস্তির বকেয়া পরিশোধ করা হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বুধবার বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিডস অ্যালাউন্স ও বকেয়া উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেয়েছি। এখন যেকোনো সময় এ টাকা বিরতণ করা হবে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর এ টাকাটা শিক্ষার্থীদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিতে চাই। যাতে সে নতুন উদ্যমে ক্লাসে ফিরতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবেন জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, খুব তাড়াতাড়ি খুলে দেওয়া হবে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কক্ষে ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে দেশের আটটি উপজেলায় উপবৃত্তি দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, স্কুল খুললেই এক হাজার টাকা কিডস অ্যালাউন্স দেওয়া হবে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আগামী বছরের (২০২০) প্রথম দিনে নতুন বইয়ের সঙ্গে জামা-জুতা কেনার জন্য এককালীন এক হাজার টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু ওই সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ ছাড় না করায় সে টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বছর করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সে টাকা ছাড় হয়নি। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ফের শিক্ষার্থীদের এক হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দেন। এরপরই এ টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এদিকে দশ মাস বন্ধ থাকার পর সর্বশেষ গত বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাসের কিস্তির উপবৃত্তির টাকা পরিশোধ চলমান রয়েছে। এরপর জুলাই-সেপ্টেম্বর, অক্টোবর-ডিসেম্বর এ দুই কিস্তির টাকা বকেয়া রয়েছে। এরপর নতুর বছর আরেকটি কিস্তিু প্রায় জমা হয়েছে। জানা গেছে, প্রতি কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। সে হিসেবে দুই কিস্তি বাবদ প্রায় ৯০০ কোটি লাগবে।
জানতে চাইলে ‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান’ প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. ইউসুফ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২০ সালের এপ্রিল-জুন মাসের কিস্তির টাকা বিতরণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অর্থ ছাড় হলে কিডস অ্যালাউন্স ও বকেয়া উপবৃত্তি টাকা বিতরণ করতে আমরা প্রস্তুত এবং এ টাকা শিক্ষার্থীদের মায়ের মোবাইলে নগদ-এর মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে এককালীন ১ হাজার করে কিডস অ্যালাউন্স দিতে হলে প্রায় ১১’শ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
এনএম/জেডএস