মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ১১ দাবি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবিতে সারা দেশের জেলা সদরে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)।
আজ বুধবার সকালে এসব মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের সঞ্চালনায় সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম, সহ-সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মো. সেলিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিজ্ঞাপন
নেতারা বলেন, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
তারা বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কোনো বদলি ও পদোন্নতির সুযোগ নেই। আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে পাহাড়সম বৈষম্য রয়েছে। ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ বছর করা হলেও স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের চাকরির বয়স আগের মতোই ৬০ বছর রয়ে গেছে।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা সদরগুলোতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো হলো- মুজিববর্ষেই মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা, ঈদের আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান, পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রথা চালুকরণ, পেনশন চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদান এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ করা, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ, সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল যথাক্রমে ৬ষ্ঠ ও ৭ম গ্রেডে উন্নীতকরণ, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি প্রথা চালু করা, শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা এবং শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা সহায়ক ডিভাইস প্রদান, ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ, শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সকল বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর দ্রুত বাস্তবায়ন।
এএজে/এনএফ