কারিগরি ও মাদ্রাসায় ২০২৩ সালেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা!
করোনার কারণে গত শিক্ষাবর্ষের মতো এ বছরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) এবং সমমানের পরীক্ষা। একই কারণে ২০২৩ সালের এসএসসি/দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের নবম এবং এইচএসসি/আলিম এবং সমমানের পরীক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণির কার্যক্রম শুরু হতে দেরি হয়েছে। তাই আগামী বছরও কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের দুই পাবলিক পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে আয়োজনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে বোর্ডে সভা করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
সম্প্রতি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে ২০২৩ সালের এসএসসি/দাখিল (ভোকেশনাল) এবং এইচএসসি/আলিম (ভোকেশনাল) পরীক্ষার পরীক্ষার্থীদের জন্যও ১৫০ কর্মদিবসের জন্য পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি নির্ধারণ সংক্রান্ত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মহসীন।
সভায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) মো, মশিউজ্জামান জানান, শিক্ষাবর্ষের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৩ সালের এসএসসি/দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের নবম শ্রেণির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। এইচএসসি/আলিম ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল একই বছরের ১ জুলাই থেকে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সপ্তাহে মাত্র দুই দিন করে সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয় গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর। সেই হিসেবে উক্ত সেশনের এসএসসি/দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস সরাসরি পাঠদান থেকে বঞ্চিত ছিল। অন্যদিকে, অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম চলমান থাকায় এইচএসসি/আলিম ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা প্রায় আট মাস শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। ফলে তাদের শিখন ঘাটতি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মো. মশিউজ্জামান আরো বলেন, করোনার কারণে ফের এক মাস বন্ধ থাকায় গত ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২০২৩ সালের এসএসসি/দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে মাত্র ৩৫ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে। ০২ মার্চ থেকে সরাসরি কার্যক্রম চালু হলেও তাদের শিখন ঘাটতি থেকেই যাবে। সেক্ষেত্রে ২০২২ সালের পরীক্ষার্থীদের জন্য ইতোপূর্বে পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি ২০২৩ সালের এইচএসসি/দাখিল ও সমমানের এবং এইচএসসি/আলিম ও সমমানের পরীক্ষার জন্য প্রযোজ্য হতে পারে।
সভায় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (কারিকুলাম) প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এসএসসি/দাখিল ও ভোকেশনাল শিক্ষাক্রম নবম ও দশম দুইটি শ্রেণিতে বিভক্ত। সাধারণ শিক্ষার শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রমের সাথে কারিগরি শিক্ষার শিক্ষাক্রমের কিছু পার্থক্য রয়েছে। কারিগরি শিক্ষার এসএসসি/দাখিল (ভোকেশনাল) শিক্ষাক্রমে একজন শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে অধ্যয়ন শেষে বোর্ড সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং দশম শ্রেণিতে অধ্যয়ন শেষে বোর্ড সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। একজন শিক্ষার্থীদের নবম ও দশম শ্রেণির বোর্ড সমাপনী পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর গড় করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
তিনি ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি/দাখিল (ভোকেশনাল) শিক্ষাক্রমে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুধু নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা করোনা মহামারির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের যে শিখন ঘাটতি রয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা যখন দশম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করবে তাদের শিখন ঘাটতি দূর করার জন্য সম্পূর্ণ সিলেবাসে পাঠদান অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেন।
তিনি আরো বলেন, এই বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে বোর্ডে সভা করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ২০২৩ সালের এসএসসি/দাখিল (ভোকেশনাল) এবং এইচএসসি/আলিম (ভোকেশনাল) পরীক্ষার সিলেবাস প্রণয়নের বিষয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে দ্রুত একটি সভা করবে। সভায় কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব সভাপতিত্ব করবেন।
এএজে//