ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান
ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানকে চেয়ারম্যান করে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রোববার (২২ আগস্ট) পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই সিদ্ধান্ত নেয়।
বিজ্ঞাপন
বিএসইসির ডেপুটি ডিরেক্টর সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস অনুসারে পরিচালনার জন্য ১০ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান এই কমিটির চেয়ারম্যান।
অপর সদস্যরা হলেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজীল দিপ্ত, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক আমিন ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, সিডিবিএলের ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ফজল বুলবুল, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারেক, বাংলাদেশ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানির চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী, দি ইন্সটিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সদস্য এ কে এম দেলোয়ার হোসেন।
এছাড়াও ফান্ড ব্যবস্থাপনার জন্য একজন চিফ অব অপারেশন (সিওও) পদে একজনকে মনোনয়ন দেবে বিএসইসি। যিনি হবেন একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা।
এই কমিটি আগামী তিন বছরের জন্য গঠন করা হয়েছে। কমিটি ফান্ডের সব কিছুর জন্য দায়ী থাকবে। কমিশন যেকোনো সময় কমিটির সদস্য পরিবর্তন ও বাতিল করতে পারবে।
উল্লেখ্য, দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে দীর্ঘদিন দাবিহীন পড়ে থাকা লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ টাকা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ব্যবহারের জন্য ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড চালু করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা পুঁজিবাজারের বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ অবণ্টিত অর্থ বিনিয়োগে আনা।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো প্রতিবছর বিনিয়োগকারীদের যে লভ্যাংশ দেয়, তার অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশের অর্থের পরিমাণ বিপুল। এর আকার ১৭ হাজার কোটি টাকার মত, যা সময়ে সময়ে কম বা বেশিও হতে পারে।
অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ কী?
কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ ঘোষণার পর তা তাদের ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্ট থেকে বিনিয়োগকারীদের নামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নগদ লভ্যাংশ সরাসরি বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। স্টক লভ্যাংশ জমা হয় তাদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টে।
যাদের নামে শেয়ার, তারা কেউ মারা গেলে, বিদেশে চলে গেলে, কিংবা দীর্ঘদিন খোঁজ না রাখলে তাদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যায়। বিও হিসাবের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। এমন ক্ষেত্রে লভ্যাংশের টাকা বা শেয়ার বিনিয়োগকারীর ব্যাংক বা বিও অ্যাকাউন্টে জমা না হয়ে কোম্পানির কাছে ফেরত যায়।
বিনিয়োগকারীর মৃত্যুর পর অনেক সময় তথ্য বা কাগজপত্রের অভাবে তার মনোনীত উত্তরাধিকারও সেই টাকা বা শেয়ার আর দাবি করেন না।
এর বাইরেও আইনি জটিলতা বা অন্য কারণে লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীর হাতে পৌঁছায় না অনেক সময়। তখন কোম্পানি ওইসব লভ্যাংশ ‘সাসপেন্ডেড’ হিসাবে জমা দেখিয়ে চূড়ান্ত আর্থিক বিবরণী তৈরি করে। সিডিবিএল হিসাবে থাকা ওইরকম ৩ হাজার ৩১৫টি সাসপেন্ডেড হিসাবে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশের তথ্য মিলেছিল।
এমআই/ওএফ