‘মন্দা’ শেয়ারবাজারেই বসল মূলধনী মুনাফা কর
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৫০ লাখ টাকার বেশি ক্যাপিটাল গেইন বা মূলধনী মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও মূলধনী মুনাফা কর আরোপের গুঞ্জনে প্রায় এক মাস ধরে পতনের মধ্যে রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত বাজেটে এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বিজ্ঞাপন
প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাপিটাল গেইন করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন। আর ৫০ লাখ টাকার বেশি ক্যাপিটাল গেইন হলে তার ওপর ১৫ শতাংশ কর ধার্য করা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো বিনিয়োগকারী ৬০ লাখ টাকা ক্যাপিটাল গেইন করলে, সেই ক্যাপিটাল গেইনের ৫০ লাখ টাকা করমুক্ত থাকবে। বাকি ১০ লাখ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
আরও পড়ুন
প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী জানান, কোনো বিনিয়োগকারী যদি কোনো শেয়ার একটানা ৫ বছর ধরে রেখে ৫০ লাখ টাকার বেশি মুনাফা করেন, সে ক্ষেত্রে ওই মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ হারে করারোপ হবে। এছাড়াও ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীর বাইরে কোনো কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে যে মুনাফা করবে, সেই মুনাফার ওপর কর দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, ক্যাপিটাল গেইন হলো শেয়ারবাজারে শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেনের মাধ্যমে করা মুনাফা। শেয়ারবাজারের মন্দা পরিস্থিতিতে বাজেটে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপ না করার দাবি জানিয়েছিলেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। তবে তাতে কর্ণপাত না করে বাড়তি রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যে ৫০ লাখ টাকার বেশি ক্যাপিটাল গেইন বা মূলধনী মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
এদিকে বর্তমানে কোম্পানি করদাতার জন্য খাতভিত্তিক অনেকগুলো করহার কার্যকর রয়েছে। আয়কর আইনে সংজ্ঞায়িত কোম্পানিগুলোর মধ্যে যারা পাবলিকলি ট্রেডেড নয়, এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে করহার শর্তসাপেক্ষে ২৭.৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থনীতিকে অধিকতর আনুষ্ঠানিক করা এবং এক ব্যক্তি কোম্পানির প্রতিষ্ঠা উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নন-লিস্টেড কোম্পানির মতোই শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে এক ব্যক্তি কোম্পানির করহার ২২.৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
এছাড়া পরিশোধিত মূলধনের নির্দিষ্ট পরিমাণের অধিক শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করহার শর্তসাপেক্ষে ২২.৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
কর্পোরেট করহার কমানোর শর্ত হিসেবে রাখা হয়েছে, সকল প্রকার আয় ও প্রাপ্তি এবং প্রত্যেক একক লেনদেনে ৫ লাখ টাকার অধিক ও বার্ষিক সর্বমোট ৩৬ লাখ টাকার বেশি সব ধরনের ব্যয় ও বিনিয়োগ অবশ্যই ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত কর্পোরেট কর হার ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বহাল রাখারও প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
টিআই/এসকেডি