শতশত কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ পাইপলাইনে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। 

সোমবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আর দুই-তিন মাস পর থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ শুরু হবে। এখন তারা (বিদেশি বিনিয়োগকারী) নির্বাচনের জন‍্য অপেক্ষা করছেন। নির্বাচনে কোন সরকার আসবে তা দেখে-শুনে বিনিয়োগ করবেন। কয়েকদিন আগে বিডার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনিও আমাকে জানিয়েছেন যে, তার হাতে ১৪ বিলিয়ন ইনভেস্টমেন্ট পাইপলাইনে রয়েছে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরি। আমাদের দেশে এখন বিনিয়োগের অনেক বড় ক্ষেত্র রয়েছে। বিনিয়োগের মাধ্যমে কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নকে আরও বেগবান করার সুযোগ রয়েছে। এই মুহূর্তে দেশে নিয়োগ আনা বড় কাজ বলেই আমরা অনেক সমালোচনার মধ্যেও কান্টি ব্র্যান্ডিং শুরু করেছি। কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং ছাড়া আপনি যে আসলেই যে কী তা কীভাবে মানুষ জানবে। 

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে দেশে বিনিয়োগের দরকার ৯শ বিলিয়ন ডলার। আর আমাদের সক্ষমতা আছে ৪২৫ বিলিয়ন। ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘাটতি রয়েছে। এই বিনিয়োগ তো আমাদের বিদেশ থেকে আনতে হবে। সেজন‍্যই আমাদের দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কান্টি ব্র্যান্ডিং করছি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ সপ্তাহে তাই আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের আরও স্মার্ট হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন স্মার্ট হতে। বিনিয়োগে ঝুঁকি যেভাবে বেড়েছে, স্মার্ট না হলে সেগুলো এড়িয়ে চলা যাবে না।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ২ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২৩’  পালন করা হচ্ছে।

বিশ্ব পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনের (আইওএসসিও) সদস্য হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ পালন করছে বিএসইসি। এর ধারাবাহিকতায় এবারও দেশে এ সপ্তাহ পালন শুরু হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে ‘ইনভেস্টর রিসাইলিয়েন্স’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সহ-সভাপতি সাইফুদ্দিন ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ। আর প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার আব্দুল হালিম।

মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিনিয়োগকারী এবং বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আপদকালীন বা বিপদ ফান্ড থাকা উচিত। যদি বিনিয়োগকারী এবং বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের এই ফান্ড থাকত, তবে এই মুহূর্তে বাজারে বিনিয়োগ করতে পারত। বাজারও দ্রুত ঘুরে দাঁড়াত।

বিএমবিএর সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান বলেন, কঠিন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারী টিকে থাকাই হলো পুঁজিবাজারের জন‍্য বড় বিষয়। বিনিয়োগকারীদের টিকে থাকতে হলে ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

ডিএসইর সিআরও খায়রুল বাশার বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কারসাজি রোধ করতে হবে। ডিএসই এই কাজ করছে।

এমআই/কেএ