সপ্তাহজুড়ে সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা লেনদেন হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরাও সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করেছেন।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে তিনদিন দরপতন আর দুদিন সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে।

আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে ৭৬টি কোম্পানির শেয়ারে দাম বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ৯৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। আর তাতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বা বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে ১৭ হাজার ২৯৫ কোটি ৮৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা বাজার পর্যবেক্ষণ করেছেন, যারা বিনিয়োগ করেছেন তারা সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করেছেন। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাজারে সাপোর্ট প্রদান ও তারল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই তারা এখন বাজারে অংশগ্রহণ করার করতে পারেন। ফলে আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহজুড়ে বাজারে সূচকের কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, গত ৩০ জুলাই সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৯৮ কোটি ৮২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। আর শেষ দিন বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) লেনদেন শেষে মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩৭০ কোটি ৫৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

অর্থাৎ টাকার অঙ্কে পুঁজি বেড়েছে ১৭ হাজার ৪৭১ কোটি ৭০ লাখ ৯১ হাজার ১৮৮ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে বেড়েছে ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর আগের সপ্তাহে পুঁজি বেড়েছিল ১০০ কোটি ৯১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪২ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস ৩০, ৩১ জুলাই এবং ৩ আগস্ট সূচক পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে। অপরদিকে ১ ও ২ আগস্ট মঙ্গল ও বুধবার সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে উভয় পুঁজিবাজারে।

সপ্তাহটিতে বাজারে লেনদেন হয়েছে মোট ৩৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন। এর মধ্যে ৭৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, তার বিপরীতে কমেছে ৯৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০৩টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ৫০টির, কমেছিল ২১৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭২ পয়েন্টে ও ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৯৬৩ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ২৫৬ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ২৯২ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন কমেছে, শতাংশের হিসাবে যা ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফুয়াং ফুডের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে লেনদেন হয়েছে, রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, জেএমআই হসপিটাল, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ, কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্স, মেট্রো স্পিনিং, এমারেল্ড অয়েল এবং ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কিছুটা ইতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৬৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

এ সময়ে লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ৭২ লাখ ৩ হাজার ৭৭ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৯ কোটি ৩৭ লাখ ২২ হাজার ৯ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ৭৯টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।

এমআই/এসকেডি