বিনিয়োগকারীদের অপছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকা ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের শেয়ার এখন পুঁজিবাজারের ‘রাজা’। টানা ১০ মাস ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা কোম্পানিটির শেয়ারে কারসাজি চক্রের নজর পড়েছে। এ কারণে হঠাৎ গত ৩ জুলাই থেকে বাড়তে শুরু করেছে শেয়ারটির দাম। আর তাতে বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার এতই জনপ্রিয় হয়েছে যে, সে দিন থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত সময়ে শেয়ারটি সবচেয়ে বেশি কেনা-বেচা করেছেন তারা। ফলে গত ৯ জুলাই বাদে বাকি সব দিন লেনদেনের শীর্ষে ছিল কোম্পানিটির শেয়ার।

এসময়ে পুঁজিবাজারে ‘রাজার’ স্থান দখলের প্রতিযোগিতায় ছিল– খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ, আরডি ফুড, বিএনও লুব-রেফ, ডেল্টা লাইফ, রয়েল টিউলিপ সি পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড। তবে গত একমাস ধরে রাজত্ব করছে ফু-ওয়াং ফুড। এর আগে করোনার সময় বাজারে এক টানা রাজস্ব করেছিল বেক্সিমকো লিমিটেড।

তিন কারণে ফু-ওয়াং ফুডস পুঁজিবাজারের ‘রাজা’ বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। প্রথমটি হলো– বিদেশি কোম্পানি মিনোরি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানটির আরও পাঁচ কোটি শেয়ার কেনার গুজব। দ্বিতীয়টি হলো– এপ্রিল থেকে ৩০ জুন ২০২৩, চতুর্থ প্রান্তিকে কোম্পানির ব্যাপক মুনাফা করার গুজব। আরেকটি হলো– এই কোম্পানিতে ‘‘‘’ ঢুকেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে গুজব ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনছে আর কারসাজি চক্র শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছে।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যমতে, ২ জুলাই শেয়ারটির মূল্য ছিল ২৩ টাকা ৫০ পয়সা, সেই শেয়ার ৩ জুলাই দিন শেষে লেনদেন হয় ২৪ টাকা ১০ পয়সায়। তারপর থেকে হু হু করে শেয়ারটির দাম মাত্র ১০ দিনে ২০ টাকা বেড়ে গত ১৬ জুলাই লেনদেন হয় ৪৩ টাকা ৫০ পয়সায়।

ফলে কোম্পানির বাজার মূলধন ২৬০ কোটি ৪৭ লাখ ২৩ হাজার ১৭৪ টাকা থেকে ২২১ কোটি ৬৭ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮০ টাকা বেড়ে ১৬ জুলাই দাঁড়িয়েছে ৪৮২ কোটি ১৫ লাখ ৮ হাজার ৮৫৪ টাকায়।

শেয়ারটির দাম বাড়ায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বিনিয়োগকারীরা। ফলে গত ৩ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত সময়ে প্রতিদিনই লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে ছিল। জুলাই মাসজুড়েই পুঁজিবাজারের লেনদেনে ‘রাজার’ স্থান দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, লেনদেনের দিকে এখন বাজারের রাজা ফু-ওয়াং ফুডস। তবে এই কোম্পানির অবস্থা ভালো না। ‘গ্যামলার’ শেয়ার কেনা-বেচা করে লেনদেনের রাজা বানিয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উচিত এসব বাজে শেয়ার থেকে দূরে থাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে গুজব ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনছে আর কারসাজি চক্র শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছে

খারাপ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়া মানেই পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা– মন্তব্য করেন তিনি।

ডিএসইর তথ্যমতে, গত ৩ জুলাই থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে কেবল ৯ জুলাই লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে ছিল কোম্পানিটির শেয়ার। এসময়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের কাছে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ছিল ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ার। ফলে এসময় কোম্পানিটির শেয়ার সবচেয়ে বেশি কেনা-বেচা হয়েছে। তাতে সবচেয়ে লেনদেনও হয়েছে এই কোম্পানির শেয়ার।

কোম্পানির অবস্থা

২০০০ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডে। ১১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনী কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৮ লাখ ৩৯ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ শেয়ার। উদ্যোক্তাদের এই শেয়ারের মধ্যে ৭ দশমিক ৬১ শতাংশের (৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২৬টি শেয়ার) মালিক মিনোরি বাংলাদেশ। অর্থাৎ কোম্পানির আগের মালিকরা সব শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন।

আর বাকি ৯২ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের কাছে ফু-ওয়াং ফুডস ‘গ্যামলিং কোম্পানি’ বলে পরিচিত।

১৭ পয়সা আয় করে দশমিক ৫০ লভ্যাংশ

আর্থিক প্রতিবেদন দেখা গেছে, ২০২১ এবং ২০২২ সালের কোম্পানিটি লোকসানে ছিল। ফলে এই দুই বছর শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। জুলাই ২০২২ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৩ সালের তিন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে, কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১৭ পয়সা। যা আগের একই সময়ে ছিল ১১ পয়সা।

গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ৩০ মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১৭ পয়সা হয়েছে। সেখান থেকে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য অন্তবর্তীকালীন দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানি শেয়ারপ্রতি ১৭ পয়সা আয় থেকে শেয়ারহোল্ডার ৫ পয়সা করে মুনাফা দিয়েছে। ফলে চলতি বছরের তিন প্রান্তিক মিলে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় থাকছে ১২ পয়সা।

এদিকে কোম্পানির রিজার্ভ সারপ্লাসের পরিবর্তে বর্তমানে ৭৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ঋণাত্মক রয়েছে। এছাড়াও কোম্পানির স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ১৬ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার ঋণ রয়েছে। সব মিলিয়ে কোম্পানির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। তারপরও শেয়ারটির দাম বাড়ছে।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যমতে, ২ জুলাই শেয়ারটির মূল্য ছিল ২৩ টাকা ৫০ পয়সা, সেই শেয়ার ৩ জুলাই দিন শেষে লেনদেন হয় ২৪ টাকা ১০ পয়সায়। তারপর থেকে হু হু করে শেয়ারটির দাম মাত্র ১০ দিনে ২০ টাকা বেড়ে গত ১৬ জুলাই লেনদেন হয় ৪৩ টাকা ৫০ পয়সায়

লভ্যাংশের ইতিহাস

ডিএসইর তথ্যমতে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি কোনো নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। এসময়ে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়াও ২০১১ সালে একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি করে রাইট শেয়ার ইস্যু করে কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন বড় করেছে। দাম বাড়িয়ে এসময়ে উচ্চ মূল্যে শেয়ার বিক্রি করে চলে গেছে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা। যা বিএসইসির কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ এবং পরিচালকদের ব্যক্তি ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের আইন লঙ্গন করেছে।

কোম্পানির এ অবস্থা দেখে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। তারপর ২০১৯ সালে মাত্র ২ শতাংশ, ২০২০ সালে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। তারপরের বছর ২০২১ এবং ২০২২ সালে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি ফু-ওয়াং ফুডস।

কেন দাম বাড়ছে

তিন কারণে চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দাম বাড়তে শুরু করে ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ারের। এর মধ্যে প্রথমটি হলো– কোম্পানির মালিকানায় আরও পরিবর্তন আসার গুজব। বাজারে গুজব ছড়ানো হয়, বিদেশি কোম্পানি মিনোরি বাংলাদেশ বাজার থেকে কোম্পানির আরও ৫ কোটি শেয়ার কিনবে।

এ বিষয়ে রূপালী ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের বিনিয়োগকারী শামসুল আলম হৃদয় ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোরবানির ঈদের পর কয়েকজন বিনিয়োগকারী আমাকে জানিয়েছে ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ারের দাম বাড়ছে। মিনোরি বাংলাদেশ নাকি কোম্পানির আরও ৫ কোটি শেয়ার কিনবে। তিন ধাপে জুলাই মাসে ১ কোটি শেয়ার কিনবে। বাকি শেয়ার এই বছরের মধ্যে কিনবে।

তিনি বলেন, আমার কাছে খবরটি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি, তাই ৩-৬ জুলাই পর্যন্ত শেয়ার কিনিনি। তবে ৯ জুলাই আমি বেশ কিছু শেয়ার কিনেছি। আমি শুনেছি, কোম্পানির লোকজন নামে-বেনামে অর্ধকোটি শেয়ার কিনেছে। এখন শুনছি সবই গুজব। তারপরও তো শেয়ারটির দাম বাড়ছে। আরও বাড়বে বলে বাজারে গুজব রয়েছে।

শেয়ারটির দাম বাড়ার দ্বিতীয় কারণ হলো– ২০২২-২৩ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে কোম্পানির ব্যাপক মুনাফা হওয়ার গুজব। আরেকটি হলো– কোম্পানিতে ‘গ্যামলার’ ঢুকেছে।

বাজারে গুজব ছড়িয়ে ৩ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই সময়ে ২৩ টাকা ৫০ পয়সার শেয়ার ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত বাড়িয়েছে চক্র। এসময়ে পুঁজিবাজারের ভাষায় ‘মামুরা’ (গ্যামলার) শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা শুরু করেছে। এ অবস্থা দেখে স্মার্ট বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন।

ফলে শেয়ারের দাম কমতে থাকে ১৭ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। এ চার কর্মদিবসে ১০ টাকা কমে শেয়ারটি লেনদেন হয় ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায়। কারসাজি চক্র পুরোপুরি বের হতে না পেরে দ্বিতীয় দফায় ২৪ জুলাই থেকে আবার দাম বাড়াতে শুরু করে। ফলে ২৪ জুলাই সর্বশেষ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয় ৩৫ টাকা ৩০ পয়সায়। এসময়ে মুনাফার আশায় কিছু সাধারণ বিনিয়োগকারী শেয়ারটি কিনতে ঝাপিয়ে পড়েন।

আইডিএফসির একজন ট্রেডার ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথম আমার কাছে খবর আসে চতুর্থ প্রান্তিকে ভালো মুনাফা হয়েছে, মামুরা ঢুকছে, শেয়ারের দাম বাড়বে। এরপর আবার খবর আসছে, মিনোরি আরও শেয়ার কিনছে।

জানতে চাইলে মিডওয়ে সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ শেয়ার নিয়ে সব সময়ই গুজব ছড়ানো হয়। কখনো মালিকানা পরিবর্তন, কখনো ব্যবসা বেড়েছে, আবার বলা হয় গ্যামলিং হবে। কমিশনের উচিত এ তথ্যগুলো কোথায় থেকে ছড়ানো হয়, কোম্পানির লোকজন না কি কারসাজি চক্র, কারা এর পেছনে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া।

পুঁজিবাজারে রাজত্বে ফু-ওয়াং ফুডস

কারসাজি চক্রের পরিকল্পনা অনুসারে যখনই সাধারণ বিনিয়োগকারী শেয়ারটি কেনা শুরু করেছে, তখন থেকে পুঁজিবাজারে দাম বৃদ্ধি ও লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ার। ফলে ৪ জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শীর্ষ স্থান বা ‘রাজার’ আসন দখল করেছে কোম্পানিটি।

ডিএসইর তথ্যমতে, ৩ জুলাই ফু-ওয়াং ফুডসের ২ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার কেনা-বেচা হয়। একইভাবে ৪ জুলাই ২ কোটি ৬৫ লাখ, ৫ জুলাই ২ কোটি ৯১ লাখ, ৬ জুলাই ৩ কোটি ২০ লাখ, ৯ জুলাই ৩ কোটি ৫২ লাখ, ১০ জুলাই ৩ কোটি ৪১ লাখ, ১১ জুলাই ৩ কোটি ৭৫ লাখ, ১২ জুলাই ৩ কোটি ৯০ লাখ, ১৩ জুলাই ৪ কোটি ২৯ লাখ, ১৬ জুলাই ৪ কোটি ৩৫ লাখ, ১৭ জুলাই ৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

এরপর দিন ২০ জুলাই লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার, ২৩ জুলাই লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার আর ২৪ জুলাই লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার।

ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ারে দাম বাড়ার দেখা দেখি এই গ্রুপের এমারেল্ড অয়েল ও ফু-ওয়াং সিরামিকের শেয়ারের দাম বাড়ছে। এগুলো লেনদেনের শীর্ষ দশে উঠে এসেছে।

কোম্পানির বক্তব্য

ফু-ওয়াং ফুডসের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিনোরি বাংলাদেশ নতুন করে ফু-ওয়াং ফুডের কোনো শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়নি, ঘোষণাও দেয়নি। বাজারে ‘গ্যামলাররা’ গুজব ছড়িয়ে শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি শেয়ারের যে দাম বেড়েছে সে বিষয়ে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্যও কোম্পানির কাছে নেই।

আফজাল হোসেন বলেন, বর্তমানে ফু-ওয়াং ফুডসের সাড়ে ৭ শতাংশ শেয়ারের মালিক মিনোরি বাংলাদেশ। নতুন করে আরও শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত হলে স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসিকে জানানো হবে। এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার দৃষ্টিতে ফু-ওয়াং ফুডস

লেনদেন বাড়ায় ব্রোকারেজ হাউজ এবং ডিএসইর মুনাফা বেশি হচ্ছে। তারপরও ডিএসই মনে করে শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। নাম না বলার শর্তে ডিএসইর এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোম্পানির শেয়ারের দাম কেন বাড়ছে এ বিষয়ে কোম্পানির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। কোম্পানি বলেছে, তাদের কাছে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। তারপরও কেন বাড়ছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে জরুরি ব্যবস্থা নেব।

জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান বাজারে ফু-ওয়াং ফুডসের লেনদেন বৃদ্ধি বাজারের জন্য ভালো। তবে এখানে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না সেটি আমরা দেখছি। অনিয়ম পেলে কোম্পানি কিংবা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআই/এসএসএইচ/