যোগ্য প্রার্থী না থাকায় আবারও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুঁজছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আগামী মাসে এমডি নিয়োগে জাতীয় দৈনিক ও ওয়েবসাইটতে বিজ্ঞপ্তি দেবে ডিএসই। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ডিএসই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদের জন্য তিনজনের একটি প্রস্তাব পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) পাঠিয়েছিল ডিএসই। তবে যোগ্য ব্যক্তি না থাকায় ডিএসইর সেই প্রস্তাব বাতিল করেছে বিএসইসি। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গত ২৫ এপ্রিল ডিএসইকে পাঠিয়েছে বিএসইসি। যা আজ বৃহস্পতিবার হাতে পেয়েছে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা বিভাগ।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে ডিএসইর একাধিক কর্মকর্তা জানান, তারা বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) চিঠির কপি হাতে পেয়েছেন।

তারা বলেন, চিঠিতে আমাদের নতুন করে এমডি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে।

তারা আরও বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত ডিএসইর এনআরসি কমিটির সভা আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর যোগ্যতার মানদণ্ড নির্ধারণ করে আগামী মাসের প্রথম দিকেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।  

এমডি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে এম সাইফুর রহমান মজুমদারকে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে বলে জানান তারা।

বিএসইসির পাঠানো এ চিঠিতে বলা হয়, এমডি পদের জন্য ডিএসইকে উপযুক্ত এবং যোগ্য প্রার্থী সন্ধানের জন্য নিয়োগের একটি নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, নতুন বিজ্ঞাপনে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড এবং প্রশাসন) রেগুলেশন, ২০১৩-এ বর্ণিত মানদণ্ড থাকতে হবে। সেইসঙ্গে ফিনটেক, আইটি এবং গভর্নেন্স সম্পর্কিত বিষয়ে জ্ঞান অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে ডিএসইর এমডি পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারিক আমিন ভূঁইয়া। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে চূড়ান্তভাবে পদত্যাগ করেন তিনি।

সাবেক এমডির জায়গায় নতুন এমডি হিসেবে নিয়োগ দিতে ব্যাংকার তোবারক হোসেন ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত এমডি সাইফুর রহমান মজুমদার এবং সাখাওয়াত হোসেনের নাম প্রস্তাব করেছিল ডিএসইর সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ইউনুসুর রহমানের বোর্ড। বিএসইসি এ তিনজনের কাউকে যোগ্য মনে করেনি, তাই তাদের প্রস্তাব বাতিল করে নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, ডিএসইর এমডি পদ খালি হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে বিএসইসি এ পদে নিয়োগ দেবে। সে লক্ষ্যে এমডি পদে নিয়োগের জন্য গত বছরের ৬ অক্টোবর জাতীয় পত্রিকা ও ডিএসইর ওয়েবসাইটে এমডি পদের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।

এরপর বিএসইসির কাছে ৪৫ দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করলে ডিএসইকে এক মাস সময় দেওয়া হয়। তবে ওই সময়ের মধ্যেও প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়নি। পরে দ্বিতীয় দফায় আবারও সময় বাড়ানোর আবেদন করে ডিএসই। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ মাস সময় বাড়ায় বিএসইসি।

এদিকে, প্রবিধান অনুসারে ডিএসইর এমডি নিয়োগের প্রক্রিয়ার ধাপগুলো হলো—প্রথমত, ডিএসইর নমিনেশন ও রিমুনেরেশন কমিটি এমডি পদের জন্য আবেদনকারীদের মধ্য থেকে কমপক্ষে তিনজন প্রার্থী নির্বাচন করবে। দ্বিতীয়ত, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ নমিনেশন ও রিমুনেরেশন কমিটি দ্বারা নির্বাচিতদের মধ্য থেকে কমপক্ষে তিনজন প্রার্থীর জন্য সুপারিশ করবে। সবশেষে বিএসইসি উল্লিখিত পদের জন্য বোর্ডের সুপারিশকৃতের মধ্যে থেকে একজন আবেদনকারীকে অনুমোদন দেবে। এছাড়া প্রবিধানে লেখা আছে যে, যদি পরিচালনা পর্ষদ এমডি বা সিইও নিয়োগে ব্যর্থ হয়, তাহলে কমিশন একজনকে নিয়োগ করতে পারে।

প্রথম দফায় এ তিনজনসহ সাতজনের কাউকে যোগ্য মনে করেনি ডিএসইর নমিনেশন ও রিমুনেরেশন কমিটি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রার্থীর ডিএসইর এমডির প্রস্তাব বিএসইসি জমা দেওয়ার জন্য আবারও কমিটিকে এ সাতজনের মধ্যে যোগ্য ব্যক্তির নাম প্রস্তাব আকারে জমা দিতে বলা হয়। সেখানে থেকে তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয়।

এমআই/এফকে