পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার নিজেদের মধ্যে মধ্যে লেনদেনের মাধ্যমে সংঘবদ্ধভাবে কারসাজি করেছেন লুৎফুল গনি টিটু ও তার চক্র। ২০১৯ সালের আগস্টের প্রথম দিকে নিজের অ্যাকাউন্ট, স্ত্রী এবং নিজের কোম্পানির বিও অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার কেনার অর্ডার দিয়ে দাম বাড়িয়েছেন এই বিনিয়োগকারী। এরপর শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে কারসাজির মাধ্যমে ১ কোটি মুনাফা তুলে নিয়েছেন। আরও প্রায় এক কোটি টাকার মুনাফার মতো শেয়ারও হাতে রয়েছে। 

দেশের পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠেছে।

সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা হলেন—মতিঝিলের মাল্টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড সার্ভিসের লিমিটেডের (১৬০৫১২০০৬৭৭৩৯৭০০) বেনিফিশিয়ারি ওনার্স ধারী (বিও) লুৎফুল গনি টিটু, তার স্ত্রী শাম্মী নেওয়াজ (বিও নং ১৬০৫১২০০৬৭৭৩৯৮০১) ও তার কোম্পানি এগ্রো ফিশারিজ লিমিটেড (বিও নং-১২০১৯৫০০৬৪৮৪৫৫৫০)। তিনি এগ্রো ফিশারিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি)। এই বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের মধ্যে।

২০১৯ সালের ১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর সময়ের কারসাজির ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন বিনিয়োগকারী লুৎফুল গনি। তিনি ভুল করেছেন বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনাও করেছেন। তবে কারসাজির ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় চক্রটিকে শাস্তি হিসেবে অর্থদণ্ড দিয়েছে বিএসইসি।

ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ার কারসাজি করে এই চক্রটি। এর মধ্যে ১ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত মোট ২০ দিনে শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম বাড়ায়। যা ক্যাসিনো কাণ্ডকেও হার মানিয়েছে। এই সময়ে মোট শেয়ারের ৫৪ শতাংশ লেনদেন করে চক্রটি। এরপর তারা বিক্রি করে দেয়। তারা শেয়ার বিক্রির ১ কোটি ১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৫৬ টাকা মুনাফা তুলে নিয়েছে। এছাড়াও আন রিয়েলাইজ গেইন করেছে ৮৬ লাখ ৫১ হাজার ২৪ টাকা।

এই কারসাজি হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এরপর চলতি বছরের ১৭ মে শুনানি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

শুনানিতে কারসাজির ব্যাপারে সঠিক কোনো উত্তর দিতে না পারায় শাস্তি হিসেবে লুৎফুল গনি টিটুকে ১৫ লাখ এবং তার প্রতিষ্ঠান ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাদেরকে ১৪ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ বিএসইসির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পে-অডার করতে বলা হয়েছে।

এমআই/কেএ