ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে যোগ্য ব্যক্তি না পাওয়ায় আবারও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। 

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী। তিনি বলেন, এমডি হওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি না পাওয়ায় ডিএসইর ব্যবস্থাপনা বিভাগকে নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে।

ডিএসইর আরেক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক শরীফ আনোয়ার হোসেন দিলীপ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডিএসইর নমিনেশন ও রিমুনেরেশন কমিটির ভারপ্রাপ্ত এমডিসহ সাতজনের জীবনবৃত্তান্ত দেখে তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে। কিন্তু সাক্ষাৎকারে এমডি হওয়ার মতো যোগ্য কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে। নমিনেশন ও রিমুনেরেশন কমিটির প্রস্তাবনার আলোকে নতুন করে এমডি খুঁজে বের করতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পর নির্ধারিত সময়ে ডিএসইর এমডি হতে মোট আগ্রহী ১৮ জন প্রার্থী আবেদন জমা করেন। এর মধ্যে জীবনবৃত্তান্ত দেখে থেকে সাতজন প্রার্থীর নাম যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর গত ১৯ ডিসেম্বর তাদের সাক্ষাৎকার নেয় ডিএসইর কমিটি। 

তারা হলেন—মোহাম্মদ আবুল হাশেম, মরিয়াম জামিল, তোবারক হোসেন ভূঁইয়া, সাইফুর রহমান মজুমদার, সাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন ও মাহবুবুর রহমান। এই সাত জনের কাউকে যোগ্য মনে করেনি ডিএসই।

এদিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বেঁধে দেওয়া সময়ে এমডি নিয়োগ দিতে না পেরে নতুন করে সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করে ডিএসই। ডিএসইর আবেদনের প্রেক্ষিতে আরও এক মাস সময় বাড়িয়েছে বিএসইসি। ফলে ডিএসইকে আগামী ৮ জানুয়ারির মধ্যে এমডি নিয়োগের সুপারিশ বিএসইকে জমা দিতে বলা হয়েছে। 

চলতি বছরের ০৯ সেপ্টেম্বর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন তারিক আমিন ভূঁইয়া। তারপর ডিএসই এমডি পদে নিয়োগের জন্য গত ৬ অক্টোবর জাতীয় পত্রিকা ও ডিএসইর ওয়েবসাইটে এমডি পদের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এরপর ৭ ও ১১ অক্টোবর আর কয়েকটি জাতীয় দৈনিক বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। যেখানে আবেদনের শেষ সময় ছিল ৬ নভেম্বর।

প্রবিধান অনুসারে ডিএসইর এমডি নিয়োগের প্রক্রিয়ার ধাপগুলো হলো—প্রথমত, ডিএসইর নমিনেশন ও রিমুনেরেশন কমিটি এমডি পদের জন্য আবেদনকারীদের মধ্য থেকে কমপক্ষে ৩ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করবে।

দ্বিতীয়ত, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ নমিনেশন ও রিমুনেরেশন কমিটি দ্বারা নির্বাচিতদের মধ্য থেকে কমপক্ষে তিনজন প্রার্থীর জন্য সুপারিশ করবে। সর্বশেষে বিএসইসি উল্লিখিত পদের জন্য বোর্ডের সুপারিশকৃতের মধ্যে থেকে একজন আবেদনকারীকে অনুমোদন করবে। 

এছাড়া প্রবিধানে আছে, যদি পরিচালনা পর্ষদ এমডি বা সিইও নিয়োগে ব্যর্থ হয় তবে কমিশন এক জনকে নিয়োগ করতে পারে।

এদিকে, বিএসইসির কাছে বোর্ডের সুপারিশ জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ৭ ডিসেম্বর। কিন্তু এমডি পদের জন্য আবেদনকৃত প্রার্থীদের মূল্যায়নের জন্য যাচাই-বাছাই এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি উপযুক্ত প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গত ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। তাই বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও সময় লাগবে। এ কারণেই বিএসইসিকে সময় বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছে ডিএসই। প্রতিষ্ঠানটি ৮ ডিসেম্বর থেকে ডিএসইর এমডি নিয়োগে কমিশনের কাছে পর্ষদের সুপারিশ জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। আর ডিএসইর এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই এমডি নিয়োগের জন্য ৩০ দিন সময় বাড়িয়েছে কমিশন।

এমআই/কেএ